মেসির আক্ষেপ ঘোচানোর বছর

9

লিওনেল মেসি কী করে ভুলবেন ২০২১ সালটাকে? একটা আন্তর্জাতিক শিরোপার জন্য কত আক্ষেপ ঝরেছে তার কণ্ঠে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেওছেন, সুযোগ থাকলে একটা বিশ্বকাপের জন্য, নিদেনপক্ষে একটা আন্তর্জাতিক শিরোপার জন্য সবক’টা ব্যালন ডি’অরও জলাঞ্জলি দিতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করতেন না তিনি। আর্জেন্টিনার হয়ে একটা শিরোপার জন্য মেসির আক্ষেপ ঘুচেছে গত ১১ জুলাই, তাও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের ডেরায়। রেফারির বাঁশি বেজে উঠতেই আর্জেন্টাইন অধিনায়ক দু’হাতে মুখ ঢেকে ফেলেছেন; এই একটা মুহূর্তের জন্যই তো ২০২১ টা মেসির জন্য অবিস্মরণীয়ই হওয়ার কথা। মেসির বছরটাকে ‘বিশেষ’ বানিয়েছে আরও একটা কারণ। চলতি বছরেই যে বার্সেলোনার সঙ্গে সম্পর্কটা আনুষ্ঠানিকভাবে চুকেবুকে গেছে তার ২১ বছরের সম্পক। সংবাদ সম্মেলনে এসে মুখে রুমাল চেপে নিজে কেঁদে ফেললেন, চোখের জলে ভাসালেন ভক্তদেরও! যে বার্সেলোনা তাকে আজকের মেসি বানিয়েছে, সেই বার্সেলোনাই ছাড়ার আনুষ্ঠানিকতা সারেন আর্থিক সংকটের বলি বনে গিয়ে! চলতি বছরের সবচেয়ে আইকনিক মুহূর্তে এটাও ছিল উল্লেখযোগ্য এক সংযোজন। বছরের সবচেয়ে ‘আইকনিক’ মুহূর্ত বিচারে আসতে পারে ইতালির ইউরো জেতার মুহূর্তটাও। পেনাল্টি শুট আউটে দুটো শট ঠেকিয়ে জয় নিশ্চিত করেও নির্বিকারে হেটে যাচ্ছিলেন জিয়ানলুইজি ডনারুমা, পেছন থেকে জর্জিও কিয়েল্লিনিরা জড়িয়ে ধরাতেই যেন সম্বিত ফিরে পেলেন। সে মুহূর্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কম আলোচনাও হয়নি। ইতিহাস বিচারেও ইতালির এই শিরোপাজয় ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ১৫ বছরের শিরোপাখরা যে মিটিয়েছিল আজ্জুরিরাও। মেসি দলের জন্য কী ছিলেন সেটা তাকে হারিয়ে বার্সেলোনা টের পেয়েছে হাড়ে হাড়ে। ২০১৮ সালে ধারাভাষ্যকার রব পালমার আর্জেন্টাইন তারকাতে বিস্ময় প্রকাশ করতে গিয়ে বলেই ফেলেছিলেন, ‘হোয়্যার উড বার্সেলোনা বি উইদাউট লিওনেল মেসি!’ সে প্রশ্নের জবাবই মিলেছে বছর শেষে, মেসিহীন বার্সা যে চলে গেছে ইউরোপের দ্বিতীয় সারির ক্লাব প্রতিযোগিতা ইউরোপায়।
সাবেক বার্সা অধিনায়ক পিএসজিতে পাড়ি জমিয়েছেন গেল আগস্টে। তিনি নিজেও কি এরপর ভালো সময় কাটিয়েছেন? তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে বেশ। তবে নতুন ক্লাব, নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে সময় নিলেও সপ্তম ব্যালন ডি’অরটা থেকে বঞ্চিত হননি তিনি। বছর জুড়ে দুরন্ত পারফর্ম করা রবার্ট লেভান্ডভস্কি, কিলিয়ান এমবাপেদের হারিয়ে জেতেন বর্ষসেরার খেতাব।