মিরসরাইয়ের স্কুলছাত্র হত্যায় ৩ জনের ফাঁসি

44

মিরসরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জোরারগঞ্জ জেবি উচ্চ বিদ্যালয় ও শিশু কাননের দশম শ্রেণির ছাত্র ফারহান সাকিব (১৫) হত্যাকান্ডের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে ৩ জনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ এবং একজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলো কাজী সরওয়ার উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম ও মীর হোসেন। যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয় হত্যাকান্ডে জড়িত হোসনে মোবারক রুবেলকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মুন্সি মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ এই রায় দেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত মামলার প্রধান আসামি কাজী সরওয়ার এখনো পলাতক। তবে বাকিরা জেল হাজতে রয়েছেন। এছাড়া মামলার বিভিন্ন ধারায় কাজী সরওয়ার উদ্দিন, শহীদুল ইসলাম ও মীর হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ১ বছর করে জেল দেওয়া হয়েছে। হোসনে মোবারক রুবেলকেও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছর জেল দেওয়া হয়। প্রধান আসামি কাজী সরওয়ার উদ্দিনকে দেওয়া হয় আরো ১০ বছরের জেল।
মামলার বাদি ও খুন হওয়া স্কুল ছাত্র সাকিবের বড় ভাই শহীদুল ইসলাম রুবেল বলেন, আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। অবশেষে আমার ভাইয়ের খুনিদের রায় হয়েছে। এই রায়ে আমার পরিবার সন্তুষ্ট। আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি প্রধান আসামি সরোয়ারকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হোক। তিনি আরো জানান, অপহরণের পর আমার ভাইকে তারা নয়টিলা মাজার সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে হত্যা করে। আসামি কাজী সরওয়ার উদ্দিন ও হোসনে মোবারক রুবেল আমাদের প্রতিবেশী। দাদার আমল থেকে জমি নিয়ে তাদের পরিবারের সাথে বিরোধ ছিল। তবে আমার ভাইকে হত্যার আগে তাদের সাথে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।
চট্টগ্রাম জেলা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি এ কে এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিনজনকে সর্বোচ্চ শাস্তি এবং একজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। তিনি আরো জানান, সাকিবকে অপহরণের পর নয়টিলার পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়। পরে শরীর থেকে তার হাতও বিচ্ছিন্ন করে খুনীরা। এ মামলায় অন্য একজন আসামি (১৪) অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় শিশু ট্রাইব্যুনালে তার বিচার চলছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৬ জুন পূর্ব শত্রুতার জেরে স্কুল ছাত্র ফারহান সাকিবকে অপহরণ করা হয়। এরপর উপজেলার ১ নম্বর করেরহাট ইউনিয়নের নয়টিলা পাহাড়ে নিয়ে জবাই করে হত্যা করে আসামিরা। এই ঘটনায় ফারহানের বড় ভাই শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর আদালতে ৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। মোট ১১ জন সাক্ষীর জবানবন্দি পর্যালোচনা করে আদালত হত্যাকান্ডের রায় দেন।