নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি
নাইক্ষ্যংছড়িতে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া ৭ গরু ও ২ হাতকড়া উদ্ধার করা হয়েছে। থানা পুলিশ ঘটনার ২৪ ঘন্টার মাথায় এসব উদ্ধার করে। তবে এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ জোর চেষ্টা চালালেও গহীন বনে আত্মগোপনে থাকায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাউকেই আটক সম্ভব হয়নি।
তবে হামলায় অংশ নেয়ার অভিযোগে ২ শতাধিক নারী-পুরুষের বিরুদ্ধের মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ, খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
স্থানীয় সূত্র গুলো আরো জানায়, বুধবার পুলিশের উপর হামলাকারীদের প্রধান হোতা ছিলো জহির, রিশাত, খোকন, মনছুর, তৈয়ব ও কয়েকজন নারী। যাদের সাথে পরে অংশ নেয় আরো অনেক নারী-পুরুষ। অনেকে বলছেন, তৃণমূল পর্যায়ের ক’জন রাজনৈতিক নেতাও সম্পৃক্ত ছিলেন এই ঘটনায়। তারা অভিযানে আটক হাতকড়া পড়ানো ২ জনকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় এবং পুলিশকে হেনস্তা করে। এ সময় টহলে থাকা পুলিশের সদস্য সংখ্যা ছিলো ৬ জন। তাদের মধ্যে ১ জন এসআই, ২ জন এএসআই এবং ৩ জন কনস্টেবল। তাদের সবাই মারধরের শিকার হন। ৪ জনকে বেশি আঘাত করে গরু পাচারকারীরা। ৭ গরু ও ২ আসামি ছিনিয়ে নেয়ার পর আরো হামলা করতে উদ্যত হলে পুলিশ ৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছিল তখন।
ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন এসআই রাকিবুল হাসান, এএসআই সোহাগ ও এএসআই পীযুষ কান্তি দাস।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, পুলিশি অভিযানে ঘটনাস্থল জারুলিয়াছড়ি, আশারতলী, কম্বনিয়া ও দক্ষিণ মৌলভীকাটায় বাড়ি ঘরে ছিলেন না কোনো পুরুষ। ৪ গ্রামের মানুষ ছিলেন আতঙ্কে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ টানটু সাহা বলেন, টহলরত পুলিশের উপর হামলাকারী গরু চোরাকারবারীরা পাহাড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে পুলিশ ছিনিয়ে নেয়া ৭ গরু উদ্ধার করেছে বৃহস্পতিরার ভোররাতে। এই ৭ টির মধ্যে ১টি মহিষ ছিলো। এর আগে ছিনিয়ে নেয়া ২ হাত কড়াও উদ্ধার করে পুলিশ।
তিনি আরো জানান, ঘটনার বিষয়ে মামলার প্রক্রিয়া চ‚ড়ান্ত। অভিযুক্তদের আটকের সুবিধার জন্য এজাহার নিয়ে বিস্তারিত জানাতে পারছি না। অভিযান চলছে, সবাই ধরা পরবে।
অপর একটি সূত্র জানায়, সংঘটিত ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় ২টি মামলা হয়েছে। এই ২ মামলায় আসামি দুই শতাধিক। একটি মামলা হয় পুলিশের উপর হামলার ঘটনায়, অপর মামলাটি হয় মিয়ানমারের গরু কারবারীদের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সকাল ৭ টায় মিয়ানমার-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ৪৬ পিলার নিকটবর্তী জারুলিয়াছড়িতে পুলিশ কর্তৃক জব্দ করা মিয়ানমারের ৭ গরু ছিনিয়ে নিতে গিয়ে পুলিশের উপর হামলা ও মারধর করে গরু পাচারকারীরা। এ সময় ১ জন এসআইসহ ৪ পুলিশ আহত হন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।