মানুষ ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন বিএনপি চায় নির্বাচন

73

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ডেঙ্গু মোকাবেলায় দেশের মানুষ আজ উদ্বিগ্ন। কিন্তু তাদের পাশে না দাঁড়িয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন নতুন নির্বাচন চাইছেন। এসব কথাবার্তা হাস্যকর।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এইউডব্লিও) আয়োজিত ম্যাথ অ্যান্ড সায়েন্স সামার স্কুলের সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমের কাছে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কিছু লোক আছে যারা কোনো কাজ করে না। অন্য কেউ কাজ করলে তার সমালোচনা করে। বিএনপিরও হয়েছে একই দশা। যেখানে ডেঙ্গু মোকাবেলায় মানুষ উদ্বিগ্ন, সেখানে তারা বসে বসে সমালোচনা করছে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নবম ওয়েজবোর্ডের প্রজ্ঞাপন জারি করার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটি সব কিছু চূড়ান্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানের জন্য সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করে ফেলেছে।
তিনি বলেন, নবম ওয়েজবোর্ডের প্রজ্ঞাপন জারি করতে সরকার যখন প্রস্তুত তখন নোয়াবের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত থেকে ওয়েজবোর্ডের কার্যক্রমের উপর স্থিতি অবস্থা বজায় রাখতে একটি আদেশ এসেছে। বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন।
আদালত চাইলে আমরা আমাদের বক্তব্য দেবো। ওয়েজবোর্ডের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরবো। ওয়োজবোর্ড বাস্তবায়নে আমরা এখনও আশাবাদী’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।
এর আগে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান (এইউডব্লিও) আয়োজিত ম্যাথ অ্যান্ড সায়েন্স সামার স্কুলের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা যখন ছোট ছিলে বাবা-মায়েরা স্নেহ দিয়ে, মায়া-মমতা দিয়ে তোমাদের সেবা করেছেন, তোমাদের বড় করেছেন। এখন তোমরা বড় হয়েছো। পড়াশোনা করছো। একদিন আরও বড় হবে। তোমাদের কাছে অনুরোধ, বড় হয়ে বাবা-মাকে ভুলে যাবে না। তাদের সেবা করবে। কারণ যে বাবা-মা সমস্ত কিছু দিয়ে তোমাদের বড় করেছে, বয়স বাড়লে সেই বাবা-মায়েরাই ছোট সন্তানের মতো হয়ে যায়।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এখন অনেক সন্তান বাবা-মাকে অবহেলা করে। তাদের সেবা করে না। ফলে পারিবারিক বন্ধন নষ্ট হচ্ছে। সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এসব বন্ধ করতে হবে। তবেই শান্তি ফিরে আসবে।
এ বিষয়ে সরকার ইতোমধ্যে সংসদে আইন পাস হয়েছে। আইনের বাস্তবায়নও আমরা করবো।’ বলেন এ রাজনীতিবিদ।
মন্ত্রী বলেন, জীবন হচ্ছে বাইসাইকেল চালানোর মতো। চাইকেল চালাতে যেমন ভারসাম্য রাখতে হয়, জীবনে সফল হতে হলেও তেমনি সবকিছুতে ভারসাম্য থাকা চাই। চলার পথে জীবনকে যুদ্ধক্ষেত্র মনে করবে। নিজের স্বপ্ন ঠিক করে তা বাস্তবায়নে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাবে। সফলতা একদিন ধরা দেবেই।
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান বাংলাদেশের গর্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে অবিশ্বাস্য কাজ করছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান। যারা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বিশ্বমানের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছো তোমরা সত্যিই ভাগ্যবান। আমরা আশা করবো, তোমরা একদিন স্বপ্নের চেয়েও বড় হবে। নারীর ক্ষমতায়নে আরও বেশি ভূমিকা রাখবে।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শিক্ষকতা আমার ভালো লাগে। একজন পরিপূর্ণ শিক্ষক হতে পারলে আমি তৃপ্ত হতাম। তবে সরকার, এইউডব্লিও কর্তৃপক্ষ তোমাদের পড়াশোনার জন্য যে অবারিত সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে- এসব দেখে আবার ছাত্রজীবনে ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে। আশা করি, তোমরা এসব সুযোগ কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন এবং গবেষণায় নিজেদের নিয়োজিত রাখবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান, শেভরনের পরিচালক (কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স) ইসমাইল চৌধুরী এবং বুয়েটের প্রফেসর ড. সেলিয়া শাহনাজ, এইউডব্লিওর রেজিস্ট্রার ড. ডেভ ডল্যান্ড প্রমুখ।
মাসব্যাপী এইউডব্লিও- ম্যাথ অ্যান্ড সায়েন্স সামার স্কুলের কার্যক্রমে ক্ল্যাসিক্যাল ম্যাকানিকস, ইলেকট্রিসিটি অ্যান্ড ম্যাগনিটিজম, বায়োইনফরম্যাটিকস, ম্যাথমেটিক্স, এলজেব্রা ও ক্যালকুলাস, স্যাট পরীক্ষা প্রস্তুতির বিষয় সমূহের উপর পড়ানো হয়।
এইউডব্লিও’র নিয়মিত শিক্ষকদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অতিথি শিক্ষক এবং আর্ন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বৈজ্ঞানিক ও গণিতবিদরা অনলাইনের মাধ্যমে ম্যাথ অ্যান্ড সায়েন্স সামার স্কুলের বিভিন্ন কোর্সের উপর লেকচার প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে এইউডব্লিও ম্যাথ অ্যান্ড সায়েন্স সামার স্কুলে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য মেধার ভিত্তিতে দুই শিক্ষার্থীকে ‘ইমার্জিং উইমেন লিডার ইন স্টিম অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। এ দুই শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপসহ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যান এ স্নাতক পর্যায়ে পড়ার সুযোগ দেয়া হবে।
সমাপনী অনুষ্ঠানের আগে এইউডব্লিও’র শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে চমৎকার নাচ, গান আর কবিতায় দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন এইউডব্লিও’র দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীরা।
পরে কোর্সে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।