ভোটের মাঠে দুই প্যানেল আছে সমঝোতার চেষ্টাও

72

চট্টগ্রাম ফুটবল খেলোয়াড় সমিতির (চফুখেস) আকাশ থেকে কালো মেঘ আস্তে আস্তে সরে যেতে শুরু করেছে। সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে স্থগিত হওয়া নির্বাচন এর অবশেষে সংশোধিত তপশিল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ইতোমধ্যে মনোনয়ন ফরম বিক্রিও (৭৮টি) শেষ হয়েছে। একজন একাধিক ফরম কিনতে পারলেও প্রার্থী হবার বেলায় এক ব্যক্তি শুধু মাত্র একটি পদে ফরম জমা দিতে পারবেন। গতকাল মনোনয়ন পত্র জমাদান পর্বের প্রথম দিনে কেউই ফরম জমা দেয়নি। ফরম জমার শেষ দিনে আজ দুই প্যানেল এবং কয়েকজন স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থীতা দাখিল করবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এদিকে ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম ফুটবল খেলোয়াড় সমিতির আসন্ন নির্বাচনে কারা প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে চলছে ব্যাপক আলোচনা। শোনা যাচ্ছে, এক প্যানেল থেকে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নেছার আহমেদ মঞ্জু (প্রকাশ প্রফেসর মঞ্জু) সভাপতি এবং ফুটবলার-রাজনীতিবিদ হাসান মুরাদ সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীতা অনেকটাই চূড়ান্ত। অন্য প্যানেল থেকে একসময় তাহেরুল আলম স্বপন, মসিউল আলম স্বপনের নাম শোনা গেলেও এ দুই হেভিওয়েট ফুটবলার ফরমই কেনেন নি। এখন শোনা যাচ্ছে মঞ্জু-হাসানের প্রতিদ্বন্ধী হিসেবে চমক নিয়ে আসছেন দুই জাতীয় ফুটবলার নাসির উদ্দিন (আর্মি নাসির) ও সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। এই দুই জাতীয় তারকার আকস্মিক সামনে আসা প্রতিপক্ষকে বিশাল চাপে ফেলেছে বলেই অনেকে মনে করছেন। তাদের প্রতিপক্ষ ইতোমধ্যেই প্রচারণা শুরু করেছে-তারা কারেন্ট প্লেয়ার, কিভাবে এতবড় সংগঠনে সময় দিবে? অন্যদিকে নাসির-মামুন সমর্থকরা বলাবলি করছে-যারা জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের চাইতে কি অন্যরা বেশি যোগ্য? তার উপর সোনালী অতীত ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দেয়ার কারণে অফিসটিও হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার পর প্রফেসর মঞ্জুর সভাপতি পদে ইলেকশনে ফুটবলাররা তাকে কিভাবে গ্রহণ করবে?
তবে এখন পর্যন্ত মঞ্জু-হাসান প্যানেলকেই বেশি সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। তারা বেশ ক’দিন আগেই চফুখেস অফিসের সামনে ক্যাম্প বানিয়ে ফুটবলারদের সাথে মত বিনিময় শুরু করেছে। বিভিন্ন নীতি নির্ধারক এবং সিনিয়র সংগঠকদের সাথেও যোগাযোগ চালাচ্ছে। বিপরীতে নাসির-মামুন প্যানেলের তেমন কার্যক্রম চোখে না পড়লেও ভিতরে ভিতরে তারা ঘর গুছিয়ে রেখেছে বলেই শোনা যায়। আর তাদের সাথে চট্টগ্রামের অধিকাংশ সিনিয়র ফুটবল লিডাররাও রয়েছেন বলে জনশ্রুতি আছে। এ দুই প্যানেলের বাইরে দু’একজনও আজ মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। আবার মধ্যম পন্থী একটা গ্রæপও নাকি সক্রিয় রয়েছে যারা চেষ্টা করছে সমঝোতার মাধ্যমে উভয় পক্ষ থেকেই গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি মাত্র প্যানেল দিয়ে ইলেকশন বাদ দিয়ে সিলেকশনের মাধ্যমে চফুখেস কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করতে। একটা বিষয় উল্লেখ না করলেও সবাই মনে করে কারা চফুখেস কমিটিতে আসছেন তা নির্ভর করছে চট্টল ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সিগন্যালের উপরও। অবশ্য এ নির্বাচন নিয়ে তিনি একটুও মাথা ঘামাচ্ছেন কলে মনে হচ্ছে না। আবার দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ নেতৃত¦ দেয়া চফুখেস’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মান্নানকে একেবারে নিরব দেখা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে গতকাল রাতে মুঠোফোনে তিনি বলেন, আমার মা অসুস্থ। গত দু’মাস ধরে তাকে নিয়ে ঢাকায় হসপিটালে আছি। এ সংগঠনের জন্য অনেক করেছি, প্রাণ কাঁদে। তবে, এখন মায়ের সেবাটাই আমার কাছে মুখ্য।
মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ সময় আজ রাত ৮ টার মধ্যেই অবশ্য একটা চিত্র পরিষ্কার হয়ে যাবে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কি হয়।
উল্লেখ্য, আজ মনোনয়নপত্র জমাদান এর পরে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে যার ভিত্তিতেই হবে চফুখেস কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও প্রাণবন্ত নির্বাচন উপহার দেয়ার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) সহ-সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান আহবায়ক হিসেবে অন্য ১০ সদস্যের সক্রিয় সহযোগিতা নিয়ে নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।