ভিকটিমসহ ৫ জনের ডিএনএ পরীক্ষা হচ্ছে

15

সবুর শুভ

বাসে আটকে গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনায় ভিকটিম ও চার আসামির ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর গত ২০ জুন ডিএনএ নমুনা নেয়ার ব্যবস্থা করেছে বায়েজিদ থানা পুলিশ। আদালতের আদেশে এই ডিএনএ সংগ্রহ করার কথা জানালেন বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান। এরপর পর্যায়ক্রমে ঘটনায় জড়িত চার আসামির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হবে। যাতে দ্রæততার সাথে নির্ভুল অভিযোগপত্র আদালতে উপস্থাপন করা যায়। এমনটি বললেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এদিকে ঘটনার পর দুই দফায় পরিচালিত অভিযানে গ্রেপ্তার করা চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাদেরকে মুখোমুখিও করা হয়। যাতে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা প্রকৃত ঘটনার ব্যাপারে পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে না পারে।
প্রসঙ্গত: চট্টগ্রাম আদালত ভবনে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ১৯ জুন দুপুরে বাসের ভেতর ধর্ষণ করার ঘটনা ঘটে উল্লেখিত গৃহবধূকে। ওইদিনই মধ্যরাতে হাটহাজারী ও ফটিকছড়ি উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা হচ্ছেন, বাসচালক নুরুল আলম, বাসের হেলপার মোহাম্মদ রবিউল ও সহযোগী মো. শাহজাহান। গত ২১ জুন ইব্রাহিম খলিল ওরফে রাজু (২৪) নামের আরেক আসামিকে অক্সিজেন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে চার আসামিকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে উপস্থাপনের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হয়। প্রথম দফায় তিন আসামিকে দ্বিতীয় দফায় ইব্রাহিমকে রিমান্ডে নেয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, আসামিরা খুবই ধূর্ত। জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণকান্ডে জড়িত থাকার কথা তারা স্বীকার করেছে।
তিনি বলেন, নির্ভুল তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুতের অংশ হিসেবে ভিকটিমের ডিএনএ নমুনা ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে। চার আসামির ডিএনএ পরীক্ষার প্রক্রিয়াও চলছে। আদালতের আদেশ নিয়ে আমরা এই প্রক্রিয়াটা পুরো সম্পন্ন করতে চাই। যাতে এই ধরনের অপরাধীরা আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যেতে না পারে।
জানা যায়, ওই গৃহবধূ ডবলমুরিং থানা এলাকায় ভাড়া থাকেন। গত ১৮ জুন জুতা কেনার জন্য দেওয়ানহাট এলাকায় একটি দোকানে তার স্বামীসহ যান। সেখানে দোকানদারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ওই গৃহবধূ ও তার স্বামীকে মারধর করে দোকানিসহ তার লোকজন। এ ঘটনায় মামলা করার জন্য ভিকটিম বায়েজিদ থানাধীন চিহ্নমূলের বাসিন্দা চাচা মো. ফারুকের (আদালতের মুন্সি) বাসায় যান। পরদিন গৃহবধূ ১৯ জুন চিহ্নমূল থেকে অক্সিজেন মোড় আসেন। ভিকটিম অক্সিজেন রেলবিট সড়কের পাশে পার্কিং করা একটি বাসচালকের কাছে জানতে চান কোর্ট বিল্ডিং যাবে কিনা। পরে তাকে একা বাসে তুলে নিয়ে দরজা বন্ধ করে চালক নুরুল আলমসহ দুজন ধর্ষণ করে। বাকিরা ধর্ষণের চেষ্টা করে। ওই গৃহবধূ অক্সিজেন মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী চার জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার চার আসামিই এখন কারাগারে রয়েছে।