ভালো ফল সত্ত্বেও ভালো কলেজ পাওয়া অনিশ্চিত

36

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ- ৫ পেয়েছে ১২ হাজার ৭৯১ শিক্ষার্থী যা গত বছরের চেয়ে ৩ হাজার ৭৮৩ জন বেশি। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের হিসেবে রেকর্ড জিপিএ- ৫ এবারই এসেছে। ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ- ৫ পেয়েছিল ৯ হাজার ৮ জন শিক্ষার্থী। ভালো ফলাফল করলেও শিক্ষার্থীরা ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসন সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শিক্ষাবোর্ডের কলেজ শাখার তথ্যানুযায়ী, চট্টগ্রামে ২৭০টি কলেজে একাদশ শ্রেণির আসন রয়েছে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩১৩টি। ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫০ জন। সে অনুযায়ী আসন সংকট থাকার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু ভালো মানের কলেজে আসন পাওয়া নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। অধিকাংশ ভালো শিক্ষার্থীর লক্ষ্য নগরীর সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া। বিপরীতে নগরীর সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তি হতে আগ্রহী শিক্ষার্থীর তুলনায় আসনসংখ্যা অপ্রতুল।
জানা গেছে, নগরের ৬ সরকারি কলেজে আসন রয়েছে ৮ হাজার ৩৪৫টি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বোর্ডে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ- ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১১ হাজার ২৯১ জনই বিজ্ঞান বিভাগের। বিপরীতে নগরীর ৬ সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগের আসন সংখ্যা ২ হাজার ৮২০টি। ফলে জিপিএ- ৫ পাওয়ার পরও ৮ হাজার ৪৭১ জন শিক্ষার্থী নগরের সরকারি কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক জাহেদুল হক পূর্বদেশকে বলেন, পর্যায়ক্রমে নগরের কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে নগরীর ৬ সরকারি কলেজে ২৭০টি আসন বাড়ানো হয়েছিল। ২০২১-২০২১ শিক্ষা বর্ষেও কিছু আসন বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। তবে এখনও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। শুধু যে শহরের কলেজগুলো ভালো তা কিন্তু নয়। এখন গ্রাম পর্যায়েও অনেক মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাওয়া যাচ্ছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ, সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ, সরকারি সিটি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ ও বাকলিয়া সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে জিপিএ চাওয়া হয়েছে ৫ পয়েন্ট। মানবিক বিভাগে চাওয়া হয়েছে ৪.৫। সরকারি কমার্স কলেজে একাদশে ভর্তির জিপিএ চাওয়া হয়েছে ৪.৫৬ পয়েন্ট। এছাড়াও কলেজগুলোতে মানবিক বিভাগে জিপিএ চাওয়া হয় ৩ পয়েন্টের বেশি। এক্ষেত্রে মানবিক বিভাগের ক্ষেত্রে তেমন প্রতিযোগিতা না হলেও বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের তুমুল প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে ২০২০ সালে আসন সংখ্যা ৫০টি বাড়িয়ে করা হয় ৬৫০টি। মানবিক বিভাগে ৩০টি বাড়িয়ে ৩৮০ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। অন্যদিকে সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ৫০টি আসন বাড়িয়ে ৬৫০ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১৫ আসন বাড়িয়ে ৬১৫ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। মানবিক বিভাগে ১০ আসন বাড়িয়ে ৪৬০ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। সরকারি সিটি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে ৫০টি আসন বাড়িয়ে ৬৫০ শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। মানবিক বিভাগে দিবা ও বৈকালিক শাখা মিলিয়ে ৬০ আসন বাড়িয়ে ৬৫০ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ৩০ আসন বাড়িয়ে ৭৬০ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়।
এদিকে গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউটকে বাকলিয়া সরকারি কলেজে রূপান্তর করা হয় ২০১৬ সালে। কলেজটিতে ২০২০ সালে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১৫ আসন এবং বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে ৮০টি করে আসন বাড়ানো হয়। ফলে এই প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৫২৫ জন এবং মানবিক ও বিজ্ঞান বিভাগে ৩৮০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায়।
অন্যদিকে সরকারি মহিলা কলেজে ২০২০ সালে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ২০ আসন, মানবিক বিভাগে ২৫ আসন এবং ৪০ আসন বাড়ানো হয়। ফলে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৪৭০ জন, মানবিক বিভাগে ৩৭৫ জন এবং বিজ্ঞান বিভাগে ৪৯০ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায়। তবে নগরীর সরকারি কমার্স কলেজের আসন সংখ্যা ৮৫০ টিতেই রাকা হয়।