বৈশাখের খরতাপে পুড়ছে চারদিক, সুখবর নেই

6

নিজস্ব প্রতিবেদক

বৈশাখের রুদ্ররূপ এবার ঝড়ের চেয়ে তাপপ্রবাহেই বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে। নববর্ষের শুরু থেকেই চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ। এর মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও গরমের তেজ কমেনি।
চলমান এই তাপপ্রবাহ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পাশাপাশি তাপপ্রবাহের মধ্যেই চট্টগ্রাম, ঢাকা, বরিশাল এবং সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টিপাতেরও আভাস দেয়া হয়েছে।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চৈত্রের শেষার্ধ থেকে এখন পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে দেশের কয়েকটি বিভাগে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া আর শিলাবৃষ্টির দেখা মিললেও এবারের কালবৈশাখী মৌসুমে খরতাপেই পুড়ছে চট্টগ্রাম অঞ্চল। দিনের মধ্যভাগে মাটিতে পা ফেললে সূর্যের তেজ কতটা প্রখর তা সহসাই টের পাওয়া যাচ্ছে। থার্মোমিটারে এখন পর্যন্ত ৩৮ ডিগ্রির ঘরে উঠা তাপমাত্রা বাতাসে উষ্ণতা ছড়াচ্ছে। সাথে জলীয় বাষ্পের আধিক্য। প্রচন্ড দাবদাহে প্রাণীক‚লে হাঁসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ পূর্বদেশকে বলেন, আমাদের দেশে এপ্রিল হচ্ছে সবচেয়ে উষ্ণতম মাস। এ মাসে তাপপ্রবাহের পাশাপাশি কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলার উপর দিয়ে মৃদু থেকে তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তাপপ্রবাহের এই গতিধারা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। অধিক তাপমাত্রার সাথে বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্য আবহাওয়া পরিস্থিতিতে অস্বস্তিকর করে তুলছে। আগামী কয়েকদিনে দিনের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ছ’টার পর থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। বিরাজমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময়ের মধ্যে ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের উপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ঢাকা, রংপুর, বরিশাল বিভাগ, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তা কিছু কিছু জায়গা থেকে প্রশমিত হতে পারে। প্রথম দুদিন সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও শেষদিন অর্থাৎ আগামী ১৯ এপ্রিল সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিকর অবস্থা প্রলম্বিত হতে পারে। বর্ধিত পাঁচদিনের আবহাওয়ার অবস্থায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দেশের সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায়।
চট্টগ্রাম বিভাগের সবকটি জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ৩৩ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে উঠানামা করেছে। সারাদেশের মধ্যে বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী চব্বিশ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলায় দেশের সর্বোচ্চ ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।