বিজয় মেলায় কেনাকাটা তুঙ্গে, বাড়ছে না সময়

19

হাজার হাজার মানুষ ঢুকছেন, বের হচ্ছেন। তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর। যারা বের হচ্ছেন তাদের দুই হাতে পলিথিন ভর্তি পণ্যসামগ্রী। কেনাকাটার তালিকায় সংসারের টুকিটাকি গৃহস্থালি সামগ্রী, শাড়ি, শাল, খেলনা, জুতো, ব্যাগ, গহনা, মুড়ি-মুড়কি, বেলুন, মাটির তৈজসপত্র, ব্যাংক, ফুলদানি, প্লাস্টিক ফুল, আচার, পিঠাপুলি, কার্পেট কী নেই! নগরের আউটার স্টেডিয়ামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের পণ্যমেলার চিত্র এটি।
‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বীর বাঙালির অহংকার’স্লোগানে এটি ৩৪তম আয়োজন। মাসব্যাপী এ মেলার শেষদিকে এসে কেনাকাটার ধুম পড়েছে। মেলায় প্রবেশের টিকিট না থাকায় নি¤œবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সব শ্রেণির ক্রেতাসমাগম হচ্ছে। এর ফলে বিকাল থেকে কিছুটা যানজটেরও সৃষ্টি হচ্ছে আশপাশের সড়কে। খবর বাংলানিউজের
সরেজমিন দেখা গেছে, মেলার স্টলগুলোতে বিক্রয়কর্মীদের দম ফেলারও ফুরসত মিলছে না। বিশেষ করে ইমিটেশন গহনা, শিশুদের খেলনা, গৃহস্থালি সামগ্রী, শাল, জামদানি শাড়ির স্টলে উপচেপড়া ভিড়। ভিড় এড়াতে অনেকে সকাল বেলা কিংবা রাতে আসছেন মেলায়। জমে উঠেছে মেলার দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তের রাইডগুলোও। শ্বশুর বাড়ির পিঠার স্টলে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পাটিসাপটা ও ভাপা পিঠা খেতে রীতিমতো কাড়াকাড়ি চলছে। মূল মেলার বাইরে ফুটপাতেও ছোট ছোট স্টল সাজিয়েছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। মেলায় কেনাকাটার পাশাপাশি আকর্ষণীয় স্টলগুলোতে ছবি তোলার, ভিডিও করার হিড়িক পড়েছে। যা ঠেকাতে ‘ছবি তোলা নিষেধ’ নোটিশ টাঙিয়েছেন দোকানিরা। কিছু স্টলে বিক্রয়মূল্য সাঁটানো রয়েছে। রয়েছে ১০০-১৫০ টাকার টুকিটাকি পণ্যভর্তি স্টলও।
আলকরণ থেকে মেলায় এসেছেন সালমা খাতুন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে টিকিট ছাড়া মেলা বলতে জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা। এ দুইটি মেলা থেকে সারা বছরের গৃহস্থালি সামগ্রী বিশেষ করে পিঠাপুলি তৈরির নানা উপকরণ, সংসারের এটা সেটা সংগ্রহ করি আমরা। এবার প্রচুর স্টল এসেছে মেলায়। কার্পেট, শাড়ি, শাল থেকে শুরু করে ঘর সাজানোর নানা উপকরণ রয়েছে। দর কষাকষি করে কিনলে ঠকার সুযোগ নেই। দোকানিরা আশা করছেন মেলার শুরুতে কয়েকদিন বন্ধ থাকায় কিছুটা সময় বাড়াবেন আয়োজকরা।
মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ১৯৮৯ সালের পর বিগত ৩৩ বছর বিজয়মেলা হচ্ছে আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার চট্টগ্রামে। যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শাণিত করার লক্ষ্যে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এবারও বিজয়মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম দিকে মেলায় দর্শক-ক্রেতার সমাগম কম থাকলেও এখন উপচেপড়া ভিড়। জমজমাট বেচাকেনা চলছে।
মেলার সময় বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ৪ জানুয়ারির মধ্যে মাঠ খালি করার জন্য আমাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমাদেরও ইচ্ছে নেই মেলার সময় বাড়ানোর। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে পণ্যমেলা। ১ জানুয়ারির মধ্যে আমরা মাঠ খালি করে দেবো।