বিচারক দেখলেন অভিযোগপত্রটি

25

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালতে অভিযোগপত্রটি দাখিল করা হয়। সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলাটি বেশ আলোচিত জানিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রশিকিউশন) মো. কামরুল হাসান বলেন, সংশ্লিষ্ট আদালত অভিযোগপত্র দেখেছেন (সীন)। এরপরে আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে অভিযোগপত্র বিচারিক আদালতে পাঠানো হবে। আগামী ১০ অক্টোবর এই মামলার শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে। পলাতক দুই আসামির বিষয়ে জানতে চাইলে এডিসি মো. কামরুল হাসান বলেন, পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও সম্পদ জব্দের পরোয়ানা পরবর্তীতে আদালত জারি করতে পারেন আইনি প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ১৩ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটায় মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ ৭ জনকে আসামি করে আদালতে ২ হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযোগপত্রে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। বাকি ছয় আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু ও শাহজাহান মিয়া। এ ছাড়া মামলা থেকে শাহ জামান, সাইদুল ইসলাম, নুরুন্নবী, রাশেদুল ইসলাম ও আবু নাছেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে অভিযোগপত্রভুক্ত সাত আসামির মধ্যে কারাগারে আছেন বাবুল, ওয়াসিম, শাহজাহান ও আনোয়ার। জামিনে আছেন এহতেশামুল। আর মুসা ও কালু শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। ২০১৬ সালের ৫ জুন জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় ওই বছরের ৬ জুন জঙ্গিরা জড়িত দাবি করে মিতুর স্বামী বাবুল আকতার পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। পাঁচলাইশ থানা পুলিশের পর নগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। তারা প্রায় তিন বছর তদন্ত করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলা তদন্তের ভার পায় পিবিআই। ২০১৬ সালের ২৪ জুন বাবুল আক্তারকে ঢাকার ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে এনে প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য ২০২১ সালের ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়। হত্যাকাÐে বাবুল জড়িত বলে সন্দেহ তৈরি হলে একইদিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন নগরের পাঁচলাইশ থানায় আরেকটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় বাবুল আক্তারসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়। এই মামলায় ২০২১ সালের ১২ মে বাবুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বাবুলের করা মামলায় পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর আদালতে নারাজি আবেদন করেন তার আইনজীবী। আদালত ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ না করে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে নিজের করা মামলায়ও ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। গত ৬ মার্চ মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। এই মামলায় আসামি বাবুল আক্তারকে রিমান্ডে নিয়ে তদন্ত সংস্থা পিবিআই এর কর্মকর্তারা শারিরীক মানসিক নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ এনেছেন বাবুল আক্তার। এই কারণে তিনি পিবিআই এর প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলাও ঠুকে দিয়েছেন আদালতে। আদালতের বিচারক মামলাটির উপর আদেশ দেয়ার দিন ধার্য রেখেছেন আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর।