বিএনপির সভা হবে সোহরাওয়ার্দী মাঠে

21

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ পল্টনে নয়, সরকারি বাহিনীর সিদ্ধান্ত ও আইন মেনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই এ সমাবেশ করতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি। তিনি বলেন, সরকারি বাহিনী যেখানে অনুমোদন দিয়েছে সেখানেই জনসভা করতে হবে। দেশে আইন আছে, সেটি মেনেই কাজ করতে হবে। আর বেশি জোশে কথা বললে শিশুবক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীর মতো পরিণতি ভোগ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফর উপলক্ষে গতকাল ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম বিভাগের নেতাদের নিয়ে যুবলীগ আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হানিফ বলেন, বিএনপির নেতারা অনেকেই জোশে হুঁশ হারিয়ে ফেলছেন। বেশি হুঁশ হারাবেন না। এক যুবলীগের ১১ নভেম্বরের সমাবেশ দেখে বেহুঁশ থেকে হুঁশ ফিরে এসেছে। আপনারা ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করতে চেয়েছেন। সমাবেশ করার অনুমোদন চেয়েছেন। আপনারা বলছেন যে লক্ষ লক্ষ মানুষ হবে জনসভায়। সরকারি বাহিনী সিদ্ধান্ত দিয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করেন। উনারা করবেন না। উনারা বলছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করবেন না, পল্টনেই তারা করতে চান। পল্টনে মানুষ হবে ৩০ থেকে ৪০ হাজার। আপনাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ যাবে কোথায়। উনারা সোহরাওয়ার্দী করতে চায় না কেন? কারণ, এই বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে একটি আতঙ্ক আছে। ১৯৭১ সালে এখান থেকেই তাদের পরাজয়ের শুরু হয়েছিল। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে সোহরাওয়ার্দী মাঠে আবারও তাদের কলঙ্কের কালিমা লাগুক তারা সেটা চায় না।
তিনি বলেন, বিএনপির সেই আগের কথার জোর নেই। এখন সুর অনেক নরম হয়ে গেছে। একটাই কারণ, যুবলীগের ঐতিহাসিক জনসভার মধ্যদিয়ে প্রমাণ হয়েছে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনের সময়। সেসময় যুবলীগের ভূমিকা ভুলে যায়নি বিএনপি-জামায়াত। এই কারণেই এক সমাবেশেই তাদের সুর নরম হয়ে গেছে।
চট্টগ্রামে ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর আগমন নিয়ে হানিফ বলেন, এদিনটি হবে চট্টগ্রামবাসীর আনন্দের দিন, উৎসবের দিন। ইতোমধ্যে রাস্তায় রাস্তায় বিভিন্ন সড়ক বর্ণিল সাজে সেজেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা এই চট্টগ্রামবাসীর জন্য অনেক কিছু দিয়েছেন। ইতোমধ্যে যে উন্নয়ন হয়েছে তা অন্য কোন জেলায় হয়নি। প্রধানমন্ত্রী একেবারে ঘর উজাড় করে চট্টগ্রামের জন্য দিয়েছেন। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রীর আগমন হবে উৎসবের। চট্টগ্রামে শুধু পলোগ্রাউন্ড নয়, গোটা শহরে জনসমুদ্র হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপির একটি স্বভাব আছে। তারা মিথ্যা বলেন বেশি। মির্জা ফখরুল ইসলাম চমৎকারভাবে মিথ্যা বলেন। তিনি একজন শিক্ষক হওয়ার পরেও সুন্দর করে গুছিয়ে মিথ্যা বলেন। তিনি বিভিন্ন সমাবেশে বিদ্যুৎ ও রিজার্ভ নিয়ে মিথ্যাচার করছেন। অথচ বর্তমানে দেশের রিজার্ভ আছে ৪৯ বিলিয়ন ডলার। অপরদিকে বিএনপির আমলে রিজার্ভ ছিল মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার। দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে। মিথ্যা ফখরুল এখন মিথ্যা শেখানোর শিক্ষক। তারা জ্বলন্ত ল্যাম্প পোস্টের নিচে হারিকেন হাতে নিয়ে বিদ্যুৎ সংকটের মিছিল করে।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতারা বলছেন, ১০ ডিসেম্বরের পর এ দেশের নেতৃত্ব দিবেন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া এটা কে? তিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দী আসামি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদান্যতায় তিনি এখন কারাগার থেকে বাইরে আছেন। এখনও আইনের চোখে তিনি কয়েদি। একজন দুর্নীতিবাজ, দÐপ্রাপ্ত, খুনী ও মুচলেকা দেয়া পলাতক আসামি রাষ্ট্রনায়ক হবেন এটা দেশের মানুষ মেনে নিবে না।
সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি মানুষের আকর্ষণ ও ভালোবাসা আছে। যুবলীগ তার আস্থার মর্যাদা দিতে সর্বদা প্রস্তুতি। জননেত্রী শেখ হাসিনার শক্তিশালী ভ্যানগার্ড হিসেবে যে কোন কর্মসূচি সফল করতে কাজ করবে যুবলীগ। সুতরাং এ সমাবেশ সফল করার সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। প্রস্তুতি সভার পর নিজ নিজ ইউনিট এবং এলাকায় গিয়ে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন। সমাবেশে শক্তি প্রদর্শন ও জনসম্পৃক্ততা প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে বুঝাতে চাই যে, শেখ হাসিনা এ মুহূর্তে সারা পৃথিবীতে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আদর্শিত একজন নেত্রী। সর্বোচ্চ জনবল নিয়ে এ সমাবেশে যোগদান করার প্রস্তুতি নিতে হবে।
যুবলীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আদিত্য নন্দীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম খান নিখিল, প্রেসিডিয়াম সদস্য মনজুরুল আলম শাহীন, যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান সোহাগ, শহিদুল হক রাসেল, মশিউর রহমান চপল। উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।