বাড়তি চাহিদায় তাজা ফুলের দামও চড়া

24

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভ্যালেন্টাইন্স ডে ও পয়লা ফাল্গুনে বসন্ত বরণকে কেন্দ্র করে বাড়তি চাহিদার কারণে এবার তাজা ফুলের দামও বেশ চড়া। বিশেষ করে, পাইকারি বাজারে গোলাপের দাম অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙেছে। দেশের সবচেয়ে বৃহত্তম তাজা ফুলের বাজার যশোরের গদাখালীর মোকামে একেকটি গোলাপ প্রকারভেদে ২০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আর নগরীর ফুলের দোকানগুলোতে খুচরা দরে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ টাকায়। পাঁচদিন আগেও পাইকারি বাজারে তাজা গোলাপের দাম ছিল অর্ধেক।
বিভিন্ন অনলাইন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, গতকাল সোমবার এক দিনেই গদখালী পাইকারি ফুলের বাজারে অন্তত তিন কোটি টাকার গোলাপ কেনাবেচা হয়েছে। চাহিদা বাড়ায় এদিন রেকর্ড পরিমাণ দামে গোলাপ বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা। দিবস দুটি ঘিরে এই অঞ্চলের চাষীরা গত এক সপ্তাহ ধরে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার গোলাপের পাইকারি দামে রেকর্ড ভেঙেছে। প্রতিটি গোলাপ ১৫ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। পাইকারি বাজারে গোলাপের এত দাম এর আগে কখনও পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে গ্লাডিওলাস, জারবেরা ও রজনীগন্ধা ফুলের দামও চড়া। উত্তরবঙ্গের বগুড়া, রাজশাহী, গোপালগঞ্জ, পাবনা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপারিরা তাজা ফুল কিনতে এ বাজারে আসেন।
গদখালী ফুলচাষী ও ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, একদিনেই গদখালী বাজার ও গোলাপের ক্ষেত থেকে অন্তত ১০ লাখ গোলাপ সারাদেশে পাঠানো হয়েছে। সাধারণত বসন্ত উৎসব আর ভালোবাসা দিবসে গোলাপের দাম থাকে দ্বিগুণ। তবে গোলাপে কখনও ১৫ টাকার বেশি পাইকারি দাম পাওয়া যায়নি। এবার রেকর্ড ২৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আর চায়না গোলাপ ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। পাঁচদিন আগে গোলাপের পাইকারি দাম ছিল প্রায় অর্ধেক। এছাড়া পাইকারি বাজারে প্রতিটি জারবেরা ১০ থেকে ১৫, রজনীগন্ধা ১২ টাকা, গøাডিওলাস ১৪ থেকে ১৮,জিপসি প্রতিমুঠো ৫০ ও কামিনী পাতা প্রতি মুঠো ২০ টাকা দরে হয়েছে। এছাড়া গাদা ফুল প্রতি হাজার দুই থেকে তিনশ’ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
নগরীতে তাজা ফুলের সবচেয়ে বড় বাজার চেরাগী পাহাড়-মোমিন রোড এলাকায়। পয়লা ফাল্গুন ও ভ্যালেন্টাইন্স ডে উপলক্ষ ধরে ফুলের দোকানগুলোতে হরেকরকম গোলাপসহ সাজিয়ে রাখা হয়েছে গøাডিওলাস, গাঁদা, জারবেরা, বেলী, চন্দ্রমল্লিকা, টিউলিপ, চেরী ও জিপসীসহ রঙ-বরঙের নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফুল। আকর্ষণীয় তোড়া, খোপার গাজরা ও ক্রাউনসহ ফুলের নানা আইটেম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দোকানিরা। এর বাইরে কর্মচারীদের কেউ ফুলের পসরা সাজাচ্ছেন, কেউবা ক্রেতার সঙ্গে দরদাম করছেন। এসব ফুলের মধ্যে দেশি জাতের গোলাপ বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। বিভিন্ন রঙের চাইনিজ গোলাপ প্রতিটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, রজনীগন্ধা প্রতি স্টিক ৩০ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ২০ টাকা ও গাঁদা ফুলের লহরপ্রতি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এর বাইরে মেয়েদের খোঁপার গাজরা আর মাথার ক্রাউন বিক্রি হচ্ছে প্রতিসেট দুইশ’ থেকে চারশ’ টাকা পর্যন্ত।
মোমিন রোডের ফুল দোকানি রাশেদুল ইসলাম বলেন, দুটি উপলক্ষ একইদিনে হওয়ায় ফুলের চাহিদা বেশি। অবশ্য এবার তাজা ফুলের দামও আগের তুলনায় কিছুটা বেশি। বড় উৎসব-পার্বণকে ঘিরেই ফুলের বেচাকেনা জমে। তবে দাম চড়া হওয়ার কারণে ক্রেতারা পরিমাণে কম ফুল কিনছেন।