বাল্যবিয়ে বন্ধ হওয়া সেই মেয়েটা পেল জিপিএ-৫

19

বান্দরবান প্রতিনিধি

১৭ বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যাচ্ছিল দাখিল পরীক্ষার্থী সুমাইয়া বিনতে দিলারার।
এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রোমেন শর্মা। এরপর তিনি এ
কিশোরীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন। গত ২৬ নভেম্বর দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ির সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আশারতলীর আব্দুল নবীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নাইক্ষ্যংছড়ির আশারতলী তাফহীমুল কুরআন দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সুমাইয়া। প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় রামুর গর্জনীয়ার আল গিফারি আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা থেকে সে দাখিল পরীক্ষা দেয়। গত সোমবার ফল প্রকাশ হলে সে ‘এ+’ (জিপিএ-৫) পায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার বড়। ছোট বোন অষ্টম শ্রেণি, পরেরজন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। একজন ব্র্যাক স্কুলে ও একমাত্র ভাই হেফজখানায় পড়ে।
তাদের পিতা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ফরিদুল আলম। তিনি চট্টগ্রামে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। কিন্তু তার সামান্য বেতনে পরিবার চালাতে হিমশিম অবস্থা। তাই নানার বাড়িতে থেকে কিশোরী পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে নানার পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার মামা সদ্য এলএলবি পাস করা উসমান গণি। তিনিও আবার তার দু’বোনকে ঢাকা ইডেন কলেজে পড়াচ্ছেন। এজন্য ভাগনির খরচ বহন করতে কষ্ট হচ্ছে বলে ভালো পাত্র পেয়ে বিয়ের আয়োজন করেছিলেন মামা। কিন্তু পরে ভুল বুঝতে পারেন।
ফরিদুল আলম ও দিলদার বেগমের বড় মেয়ে সুমাইয়ার দাখিলের এ ফল শুনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা সদর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমনের মাধ্যমে সুমাইয়াকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান এবং ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহযোগিতাও প্রদান করেন। সুমাইয়ার মামা জানান, তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন এবং ভাগনির ফল নিজে দেখেছেন। এতে তিনি খুবই খুশি। ভাগনিকে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে সাধ্যমত সব সুযোগ করে দেবেন। সুমাইয়া জানায়, সে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে অনার্স-মাস্টার্সও করতে চায়। পড়ালেখা শেষ করে দেশ ও সমাজের কল্যাণে কাজ করবে।