বাইরের ল্যাবে নেগেটিভ বিমানবন্দরে পজিটিভ

19

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফ্লাই দুবাই এয়ারলাইন্সের দুবাইগামী ১৮১ জন যাত্রী যাত্রার উদ্দেশে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবস্থান করছিলেন। সবাই বিভিন্ন ল্যাব থেকে করোনা পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ ফলাফল সনদ হাতে নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু বিমানে উঠার আগেই দেখা দেয় বিপত্তি। ১৮১ জনের মধ্যে ৪১ জনের করোনা পজিটিভ হয় বিমানবন্দরের পিসিআর ল্যাবে। এতে আটকে যায় ওই ৪১ যাত্রীর বিদেশ যাত্রা। পরে যাত্রা বাতিল হওয়া এসব যাত্রী বিক্ষোভ করেছেন। এতে বিমানবন্দরের গ্যালারিতে উত্তেজনা দেখা দেয়। গতকাল সোমবার সকালে শাহ আমানত বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটে।
বিমানবন্দর থেকে বাড়িতে ফিরে না গিয়ে অনশন শুরু করেন এই যাত্রীরা। তাদের যুক্তি, তারা সকলেই সুস্থ। সকলেই ২৪ ঘণ্টা আগে স্থানীয়ভাবে করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন। সেখানে নেগেটিভ এসেছে। অথচ বিমানবন্দরের পিসিআর ল্যাবে করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে তাদের। পরে পুলিশ এসে তাদের বিমানবন্দর থেকে সরিয়ে দেয়।
জানা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রাম থেকে দুবাই শিডিউল ছিল ফ্লাই দুবাই এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের। এতে যাত্রীর সংখ্যা ছিল ১৮১ জন। কিন্তু এদের মধ্যে করোনার পিসিআর ল্যাব পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট আসে ৪১ জনের। ফলে ৪১ জন ছাড়া ১৪০ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর ছেড়ে যায় ফ্লাইটটি।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, সকাল সাড়ে ৮টায় ফ্লাই দুবাই ফ্লাইটে ১৮১ জন যাত্রীর মধ্যে ৪১ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ হয়। যাত্রীরা করোনা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আগের দিন রাত ১টার মধ্যে বিমানবন্দরে এসেছিল।
মোহাম্মদ হোসেন নামে যাত্রা বাতিল হওয়া একজন বলেন, বিমানবন্দরে আসার আগে স্থানীয়ভাবে করোনা পরীক্ষা করিয়েছি। কিন্তু সেখানে রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। অথচ বিমানবন্দরের পিসিআর পরীক্ষায় পজিটিভ চলে এলো। এটি এ পিসিআর ল্যাবগুলোর কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। ভিসার মেয়াদ আছে আর মাত্র এক সপ্তাহ। এখন আমি কি করবো, কোথায় যাবো কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আমি একজন সুস্থ মানুষ। আমার শরীরে কোনো লক্ষণও নেই। তবে আমি কেন পজিটিভ হলাম। বাড়িতে পরীক্ষা করিয়ে বিমানবন্দরে এসেছি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেন, পিসিআর পরীক্ষায় কিছু লক্ষণ না থাকলেও পজিটিভ আসতে পারে। তবে পজেটিভ আসলে ১৪ দিন পর আবার যেতে পারছেন যাত্রীরা। যদি আরব আমিরাতের বিমানবন্দরে পজিটিভ আসে তাহলে তো আরও বেশি সমস্যায় পড়বে যাত্রীরা। সেই সাথে প্রশ্ন তোলা হবে আমাদের দেশের ল্যাবগুলোর বিরুদ্ধেও।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন খান বলেন, বিমানবন্দরের পিসিআর ল্যাব পরীক্ষায় যাদের পজিটিভ হয়েছে তাদের তো বাড়িতে চলে যেতেই হবে। কিন্তু তারা সেটি মেনে নিতে চান না। আসলে প্রবাসীরা কষ্ট করে ভিসা টিকিট করেন। এখানে যখন বাধাপ্রাপ্ত হন তখন একটু উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এটি স্বভাবিকই।