বর্ষা হত্যা মামলা পরিচালনায় ৫ সদস্যের এডভোকেট টিম

55

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর জামালখান এলাকায় সাত বছরের শিশুকন্যা বর্ষা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস্ ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ)।
গতকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনের অনুরোধে সংস্থাটি এই মামলা বিনা খরচে পরিচালনা ও ভিকটিম-এর পরিবারকে আইনি সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেয়।
গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় বার এসোসিয়েশন ভবনে দুই কন্যাসহ উপস্থিত হয়ে ভিকটিমের মা ঝর্ণা বেগম (৫০) মামলাটি পরিচালনার জন্য ওকালতনামা ও নথিপত্র বিএইচআরএফ মহাসচিব এডভোকেট জিয়া হাবীব আহ্সানের কাছে হস্তান্তর করেন।
এডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান মামলার দায়িত্ব গ্রহণ করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিশেষ হিউম্যান রাইটস এডভোকেট টিম গঠনের ঘোষণা দেন। এছাড়া হতদরিদ্র পরিবারটির পাশে থাকার আশ্বাস এবং একমাত্র আসামি লক্ষণ দাশ (৩০) এর সর্বোচ্চ শান্তি নিশ্চিত করতে আইনি লড়াই পরিচালনার ঘোষণা দেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, মামলাটির এজাহার দায়েরের সময় আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তার না হওয়ায় দÐবিধির ধারা যুক্ত হয়, মামলায় ধর্ষণের ধারা সংযুক্ত হয়নি। মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(২) ধারায় (রেপ উইথ মার্ডার) তদন্ত ও চার্জশিট হবে। মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচার্য, সঠিক ধারায় মামলা পরিচালনার জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিতে বিজ্ঞ আদালতে দরখাস্ত দিবে মানবাধিকার সংগঠন বিএইচআরএফ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ মানবাধিকার কর্মী এডভোকেট সুনীল কুমার সরকার, এডভোকেট এএইচএম জসীম উদ্দিন, এডভোকেট মো. সাইফুদ্দিন খালেদ, এডভোকেট মো. বদরুল হাসান, এডভোকেট জিয়া উদ্দিন আরমান, মানবাধিকার কর্মী কে এম শান্তনু চৌধুরী, রিদায়নুল করিম নাভিল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, নগরীর শিশু বর্ষা মাছুয়া ঝর্ণা এলাকার মৃত আব্দুল হকের মেয়ে। আব্দুল হক ২০১৮ সালে মারা যান। মোমিন রোডে ইকো প্যাকেজিং নামে তার একটি প্রেস ছিল। মা ঝর্ণা বেগম চাঁদপুরের শাহরাস্তি এলাকার বাসিন্দা। সৎ বাবা ইউসুফ আলী ও মা ঝর্ণা বেগমের সাথে জামালখানের সিকদার হোটেলের পাশের গলিতে শাওন ভবনের নিচ তলায় বসবাস করতো বর্ষা। পড়তো কুসুম কুমারি স্কুলে প্রথম শ্রেণীতে। গত ২৪ অক্টোবর বিকেল ৪ টার সময় মায়ের কাছ থেকে ২০ টাকা চেয়ে নিয়ে বাসা থেকে বের হয় বর্ষা। এরপর গলির মুখে সিকদার হোটেলের পাশের আজাদ স্টোর থেকে চিপস ও বিস্কুট কিনে বাসার উদ্দেশ্যেই যায় সে। কিন্তু বাসায় না গিয়ে নিখোঁজ হয়। এরপর তাকে খুঁজতে বের হয় পরিবারের লোকজন। আশপাশেসহ নানা জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে বিষয়টি প্রথমে স্থানীয় কাউন্সিলর ও পরে থানাকে অবহিত করা হয়। তাকে খুঁজে পেতে নগরজুড়ে মাইকিংও করা হয়। নিখোঁজের তিনদিন পর ২৭ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় জামালখানের সিকদার হোটেলের পিছনের একটি নালা থেকে মারজানা হক বর্ষার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে হত্যাকাÐের শিকার শিশুটির বাসার অদূরে শ্যামল স্টোর নামে এক দোকানের কর্মচারী লক্ষণ দাশ (৩০) এই হত্যাকাÐ ঘটিয়েছেন বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়।