‘বর্মাইয়া’ উৎপাত খুটাখালীতেও

9

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নে তাহেরা বেগম (৩৭) নামের এক নারী দোকানীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে রাজি না হওয়ায় ছুরিকাঘাত করে মারাত্মক জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঐ এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জড়িত ‘বর্মাইয়া’ ফোরকানের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন গ্রামবাসী।
গুরুতর আহত ২ সন্তানের জননী তাহেরাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পিয়াজ্জ্যাকাটা গ্রামের নুরুল আলম প্রকাশ বাবু’র স্ত্রী বলে জানা গেছে।
গত রবিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮ টার সময় পিয়াজ্জ্যাকাটা-রূপসীনগর এলাকায় ঐ নারীর দোকানে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আহতের স্বামী নুরুল আলম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্বামী নুরুল আলম জানান, তার স্ত্রী তাহেরা বেগম ২ সন্তান নিয়ে পিয়াজ্জ্যাকাটা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দোকান করে আসছেন। একই এলাকার বদিউল আলমের ছেলে ফোরকান (৩২) প্রকাশ ‘বর্মাইয়া ফোরকান’ প্রায় সময় তার স্ত্রী তাহেরাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায়। শনিবার রাতে বর্মাইয়া ফোরকান তাহেরাকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে এবং এক পর্যায়ে কুপ্রস্তাব দেয়। বিষয়টি তাহেরা স্থানীয় লোকজনের কাছে প্রকাশ করেন। এর জের ধরে গত রবিবার সকাল সাড়ে ৮ টার সময় ফোরকান তার দলবল নিয়ে তাহেরার দোকানে গিয়ে এলাকায় তাকে নিয়ে এসব কথা কেন প্রকাশ করা হয়েছে জানতে চেয়ে হুমকি-ধমকি দেন। তখন উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
হাতাহাতি ও বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে ফোরকান তাহেরাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এসময় মাথায় ছুরির আঘাতে মাটিতে পড়ে যান ঐ নারী দোকানী। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা বেগতিক হওয়ায় রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানান স্বামী নুরুল আলম।
বর্মাইয়া ফোরকান দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নানাভাবে নারীদের উত্যক্ত করে আসছিল। প্রায়ই সে কুপ্রস্তাব দিত। বিষয়টি এলাকাবাসী জানতে পারলেও অপরাধীদের ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারতেন না। কারণ, তার হাতে সবসময় ছুরি থাকে বলে দাবি করেন নুরুল আলমসহ স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দারা।
আহত তাহেরা বেগম বলেন, রবিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে বর্মাইয়া ফোরকান লোকজন নিয়ে আমার দোকানে এসে শুরুতে গালিগালাজ করে। প্রতিবাদ করতে চাইলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর কয়েকটি ছুরিকাঘাত করে দলবল নিয়ে চলে যায়।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় ফোরকানের ভয়ে থানায় অভিযোগ করিনি। রাতে কয়েক দফা আমার বাড়িতে গিয়ে মামলা করলে পরিবারের সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করার হুমকি দিয়েছে।
তাহেরার ছেলে মিজান জানায়, আমরা গরিব আর ওই বর্মাইয়া ফোরকান প্রভাবশালী। এলাকাবাসী শুনেও ভয়ে কোনো প্রতিবাদ করেনি। এমনকি বিগত ক’মাস পূর্বে ঐ এলাকার নুরুল হোছনের মেয়ের হাত ভেঙে দেন ফোরকান। আমিনা খাতুন নামের অপর এক নারী তার ভয়ে এলাকা ছাড়া হয়েছে।
চকরিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, এমন ঘটনার অভিযোগ পাইনি। পেলে অপরাধীকে দ্রæত গ্রেপ্তার করা হবে।