বন্দরের বহির্নোঙর ও ঘাটে আটকা ৩১ লাখ টন পণ্য

42

নৌযান শ্রমিকরা ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর এবং বিভিন্ন ঘাটে ৩১ লাখ টন পণ্য আটকে আছে। গত শুক্রবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে নৌযান শ্রমিকদের এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য মতে, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে থাকা বড় জাহাজ, লাইটারেজ এবং বিভিন্ন শিল্পগ্রূপের মালিকানাধীন ৫৭টি বিদেশি বড় জাহাজে সাড়ে ১৩ লাখ টন, বিভিন্ন ঘাটে অবস্থানরত ৯৮৬টি লাইটারেজ জাহাজে ১৩ লাখ টন এবং বিভিন্ন শিল্পগ্রূপের
মালিকানাধীন প্রায় ৩০০টি জাহাজে পাঁচ লাখ টনের মতো পণ্য রয়েছে। সেই হিসেবে জাহাজগুলোতে
খালাসের অপেক্ষায় আছে সাড়ে ৩১ লাখ টন পণ্য।
এদিকে বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে লাইটারেজ জাহাজে করে পণ্য কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঘাটে নিয়ে গিয়ে খালাস করা হয়। চলমান ধর্মঘটের কারণে লাইটার জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য নিয়ে আসা মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে না। গতকাল শনিবার বহির্নোঙরে ৫৭টি পণ্যবাহী জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। এসব জাহাজে সিমেন্ট ক্লিংকার, সিরামিক মাটি, জিপসাম, স্ল্যাগ, ইস্পাতের কাঁচামাল, কয়লা, ডাল, গম, সার, ও চিনিসহ বিভিন্ন ধরনের সাড়ে ১৩ লাখ টন পণ্য রয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ধর্মঘটের কারণে বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানরত ৫৭টি বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে বহির্নোঙর ও নদীর ঘাটগুলোতে পণ্য খালাস বন্ধ থাকলেও বন্দরের জেটিতে পণ্য ওঠানামা স্বাভাবিক রয়েছে।
সাধারণত বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য নিয়ে কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঘাটে নিয়ে গিয়ে খালাস করা হয়।
লাইটারেজ জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ বলেন, ধর্মঘটের কারণে প্রায় ১২ লাখ ৯০ হাজার টনের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আটকে আছে ৯৮৬টি জাহাজ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে এসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেছেন, শুত্রবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ৮ শ্রমিক সংগঠন যৌথভাবে ধর্মঘট ডাকে। আমরা সরকার ও মালিকপক্ষকে অনেক সময় দিয়েছি তবুও তারা আমাদের দাবি পূরণ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে ধর্মঘট ডেকেছি। আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
উল্লেখ্য, ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সর্বস্তরের শ্রমিকদের বেতন প্রদান, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস প্রদান, মালিক কর্তৃক খাদ্য ভাতা প্রদান, নৌযান শ্রমিকদের সমুদ্র ও রাত্রিকালীন ভাতা নির্ধারণ, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ ও নৌপথে চাঁদাবাজি বন্ধ করা অন্যতম।