ফাটল পায়নি চসিকের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটিও লিখিত প্রতিবেদনের পর যান চলাচল

23

নিজস্ব প্রতিবেদক
নগরের বহদ্দারহাটের এমএ মান্নান ফ্লাইওভারের র‌্যাম্পের পিলারে কোনো ফাটল পাননি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন গঠিত নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির সদস্যরা। গতকাল ফ্লাইওভার পরিদর্শন শেষে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের এ তথ্য জানান তারা। এ সময় সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীসহ একাধিক প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন। দুয়েক দিনের মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন পেলে সুপারিশ অনুসারে র‌্যাম্পটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে চসিক। এর আগে র‌্যাম্পটির নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিপিএম কনসালটেন্টসের বিশেষজ্ঞরা একই মতামত জানিয়েছিলেন। তবুও অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আবদুর রহমান ভুঁইয়াকে আহŸায়ক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী হাফিজুর রহমানকে সদস্য করে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে সিটি করপোরেশন। কমিটির লিখিত প্রতিবেদন পেলে র‌্যাম্পটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির আহŸায়ক অধ্যাপক আবদুর রহমান ভুঁইয়া জানান, আমরা দুটো পিয়ার (পিলার) খতিয়ে দেখেছি। এতে ভয়ের কিছু পাইনি। আমরা যা পেয়েছি তা নিয়ে ষ পৃষ্ঠা ৭, কলাম ১.
ষ প্রথম পৃষ্ঠার পর
শিগগির প্রতিবেদন উল্লেখ করে সুপারিশ করবো। একই প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, ফ্লাইওভারটির র‌্যাম্পের পিলারে কোনো ফাটল পাইনি। যেটি ফাটল মনে হচ্ছে সেটি কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট। র‌্যাম্পটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিতে সুপারিশ করা হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহিন উল ইসলাম পূর্বদেশকে বলেন, তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা তেমন কিছু পাননি। তাদের প্রতিবেদন হাতে পেলে সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে সিটি করপোরেশন। অন্যদিকে র‌্যাম্পের মুখে উচ্চতারোধক বার স্থাপন সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ২৫ অক্টোবর র‌্যাম্পের একটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে- এমন ছবি ফেসবুকে ছড়ালে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে ওইদিন রাত থেকে র‌্যাম্পটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার সকালে পরিদর্শনে গিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং প্রধান প্রকৌশলীও বলেছেন, নির্মাণ ত্রæটির কারণেই ফাটল ধরেছে। যে কোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন মেয়র। তবে ফ্লাইওভারটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দাবি, এটি ফাটল নয়; পিলারের জোড়া। ২৭ অক্টোবর র‌্যাম্পটির নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদল পরীক্ষা করে জানান, খালি চোখে যেটা ফাটল মনে হচ্ছে, সেটি আসলে কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট।
এসব বিষয় নিয়ে ম্যাক্স গ্রæপের মিডিয়া ম্যানেজার ইব্রাহিম খলিল পলাশ পূর্বদেশকে জানান, বহদ্দারহাট এমএ মান্নান ফ্লাইওভার ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড নির্মাণ করেনি। তাই ২০১২ সালে প্রাণহানির যে ঘটনা ঘটেছে তার সাথে ম্যাক্সের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ২০১৬ সালে সিডিএ’র নকশা ও ডিজাইন অনুযায়ী আরাকান রোডের দিকে র‌্যাম্পটি ম্যাক্স নির্মাণ করে। আমাদের বিশেষজ্ঞ যা মত দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের নিরপেক্ষ গবেষক দলও একই মত দিয়েছেন। ফেসবুকে ছবি কেউ পোস্ট করল, সেটা সঠিকভাবে যাচাই বাছাই না করে মিডিয়াতে তোলপাড়ের সৃষ্টি হলো। মানুষ আতঙ্কিত হলো, বিভ্রান্ত হলো। কেননা মানুষ এখনও মিডিয়াকে প্রচুর বিশ্বাস করে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে, মিডিয়া থেকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা আশা করছি।
উদ্বোধনের চারবছরে এমএ মান্নান ফ্লাইওভার কার্যকর না হওয়ায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আরাকান সড়কমুখী র‌্যাম্প নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। ৩২৬ মিটার দীর্ঘ এবং ৬ দশমিক ৭ মিটার প্রস্থের র‌্যাম্পটি নির্মাণ শেষে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। র‌্যাম্পটিতে ১৪টি পিলার রয়েছে।