প্রসঙ্গ: কোভিড-১৯ বুস্টার ডোজ

35

আমাদের দেশে অনেকে করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ নেওয়ার পরও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাই অনেকের মতে, এই টিকা নেয়ার কারণে তারা আক্রান্ত হয়েছেন মূলত এটি ভুল ধারনা। কেননা করোনাভাইরাসের দুইটি ডোজ নেওয়ার পরেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হতে অন্তত আরো দুই সপ্তাহ সময় লাগে। সেই পর্যন্ত যদি কেউ সতর্ক না থাকে সে ক্ষেত্রে সকলের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। ইতোমধ্যে আমরা যে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছি বাংলাদেশে সেই ভ্যাকসিন আসে গত জানুয়ারিতে আর মেয়াদ শেষ হবে আগামী জুনে।
সরকার প্রথমে ভেবেছিল, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ১ম ডোজ দেওয়ার চার সপ্তাহ পরে ২য় ডোজ দেয়া হবে। পরে সরকার আট সপ্তাহ পরে ২য় ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কেননা বৈজ্ঞানিকভাবে দেখা গেছে, প্রথম ডোজ দেওয়ার ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করলে প্রতিটি দেহে ইমিউনিটি তৈরি হয়। এতে মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তবে ১২ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় বা বুস্টার ডোজ নিতে পারলে সবচেয়ে উত্তম। সরকার তবে এই ক্ষেত্রে উৎপাদন, মেয়াদ, টিকাদান পদ্ধতি সব কিছু বিবেচনা নিয়ে আট সপ্তাহ পরে ২য় ডোজ দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। মনে রাখতে হবে হবে, ১ম ডোজ নয়, রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিখুঁত ভাবে কার্যকর করে তোলার জন্যই ২য় ডোজের বিকল্প নেই। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে যারা বুস্টার ডোজ নিয়েছে তাদের ৯৬ শতাংই পূর্ণ নিরাপদ ছিল। আর যারা প্রথম ডোজ টিকা নিয়ে ২য় বা বুস্টার ডোজ নেয়নি তাদের মাত্র ৬০ শতাংশ নিরাপদ ছিল। করোনা রোগের ক্ষেত্রে ২য় বা বুস্টার ডোজ নেয়া অতি জরুরি। টিকার ডোজ দেওয়ার পর প্রথমে যে কোন মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা-শ্বেত কণিকা (হোয়াইট বøাড সেল) সক্রিয় হয়। এতে প্লাজমা বি সেল সক্রিয় হলেও এই সেল গুলো বেশি দিন টিকে থাকে না। তাহাছাড়া টিকা নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় কিন্তু বুস্টার ডোজ গ্রহণ না করলে অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা দ্রুত কমে যায়। তাই সাধারণভাবে বলা যায়, টিকার প্রথম ডোজে কিছুটা নিশ্চয়তা পাওয়া গেলেও তবে মোটামুটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য বুস্টার ডোজ গ্রহণ অতি জরুরী।আমি করোনার ২য় ডোজ গ্রহন করেছি, কাজেই ২য় ডোজ নেওয়ার ক্ষেত্রে যাদের অনিহা তাদের দেরী না করে দ্রুত তা গ্রহণ করা উচিত।
মো. কামরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম।