পেলো না এমপিওভুক্তির মর্যাদা

34

দীর্ঘ পঁচিশ বছর পরও এমপিওভুক্তি থেকে বঞ্চিত হলো রাজস্থলী উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ঘিলাছড়ি নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সম্প্রতি সরকার যে এমপিও নিবন্ধন দিয়েছে তাতেও এ প্রতিষ্ঠানের নাম না থাকায় চরম হতাশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। জানা যায়, ১৯৯৫ সালে বাবু সুদত্ত বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা ও এলাকার বিত্তবানদের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। অনেক স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা করে বিদ্যালয়টি। ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি হতে নি¤œ মাধ্যমিক পর্যায়ে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করলেও আদৌ এমপিও হয়নি। ফলে মানবেতর জীবন যাপনের পথ দীর্ঘ হয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের। তবুও দীর্ঘ প্রতিক্ষার পরও বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পর গত ১৮ অক্টোবর প্রকাশিত এমপিও ভুক্তির নিবন্ধনের তালিকা এ প্রতিষ্ঠানের নাম না থাকায় সংশ্লিষ্ট সকলে হতাশ। জানা যায়, ৬ষ্ঠ শ্রেণী হতে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সর্বমোট ২৫০জন ছাত্র ছাত্রী রয়েছে বিদ্যালয়টিতে। এতে বিদ্যালয়ের ফলাফলও ভাল। শিক্ষক রয়েছে মাত্র ৪ জন।
কর্মচারী রয়েছে ৩ জন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক চিংঅংপ্রæ মারমা জানান, খুবই কষ্ট হয়। আশায় আশায় এত বছর ধরে শিক্ষকতা করে যাচ্ছি। কিন্তু প্রাপ্তির ফলাফল শূন্য। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শ্রদ্ধা শংকর তঞ্চঙ্গ্যা জানান, খুব হতাশা কাজ করছে। এ বিদ্যালয়ের অসহায় দরিদ্র ছাত্র ছাত্রীদের মুখ দেখে অনেকটা দায় নিয়ে পরে আছি। এতবড় একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে যেন বৈষম্যের দৃষ্টি দিয়ে দেখেছে। কেন এমপিও হল না তা আমরা বুঝতে পারছি না। শিক্ষকদের সমস্যাগুলো প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে।
অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্র বলেন, স্যারদের মনে আনন্দ দেখলে ভাল লাগে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিনা বেতনে স্যারেরা শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজল কুমার তঞ্চঙ্যা জানান, এমপিওভুক্তের আশায় শুরু থেকে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। অনেক স্বপ্ন দেখেছি। আমরা অনেকবার বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্তির জন্য আবেদন করে যাচ্ছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য এবারেও হয়নি।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন ফরম পুরণ করে জমা দিয়েছি। বিদ্যালয়ের অবকাঠামো স্বয়ং সম্পূর্ণ। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জানান, কেন এমপিওভুক্ত হল না জানিনা। এখন কি করব তা আমরা বুঝে উঠতে পারছি না। চাপও দিতে পারছি না। যেন সবার মাঝে হতাশা কাজ করছে। সব কিছু মিলিয়ে ঝিমিয়ে পড়ার অবস্থা। তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী সদয় হলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়া থেকে মুক্তি পাবে। এলাকাবাসী ও অভিভাবক মহল জানান, বিদ্যালয়ের পাশে অবকাঠামো উন্নয়নে একটি বিল্ডিং স্থাপন করা হচ্ছে। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তি করা না হলে অদূর ভবিষ্যতে বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট জোড়ালোভাবে দাবী জানাচ্ছি। বিদ্যালয়টি এমপিভুক্ত করে শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য।