পাহাড় ধস ও দুর্যোগ মোকাবেলায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের সভা

47

রাঙামাটিতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে পাহাড় ধস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় করণীয় ঠিক করতে প্রস্তুতি সভা করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ।
সভায় সেনাবাহিনীর সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কেএম শফি কামাল, ফায়ার ব্রিগেডের সহকারী পরিচালক দিদারুল আলমসহ বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
২০১৭ সালের ১৩ জুন ভয়াল ভূমি ধসের ঘটনায় সদরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। যাদের মধ্যে ছিলেন ৫ সেনা সদস্য। এরপর ২০১৮ সালের বর্ষণে পাহাড় ধসে জেলার নানিয়ারচরে ফের ১১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আসন্ন বর্ষায় যাতে আর কোনো প্রাণহানি না ঘটে, সেজন্য পাহাড় ধস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসন নিয়মিত সমন্বয় সভা এবং করণীয় নির্ধারণে সভা ও উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এসব প্রস্তুতির মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ সর্বসাধারণকে পাহাড় কাটা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাহাড় কাটার সংবাদ তাৎক্ষণিক জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে বলেছে জেলা প্রশাসন।
সভায় পাহাড়ের পাদদেশ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে বসতঘর সরিয়ে নিরাপদে যেতে পরিবারগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাহাড়ের ঢাল, পাদদেশ বা চিহ্নিত স্থানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা থেকে বিরত থাকতে এবং অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের তথ্য জেলা প্রশাসনকে জানাতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়। স্থানীয় অধিবাসীদেরও এই বিষয়ে সহযোগিতার আহব্বান জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন, গত বছর রাঙামাটি শহরে বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব হয়েছে। তারপরও জেলার নানিয়ারচরে পাহাড় ধসে ১১ জন নিহত হয়েছেন। গত বছরের মতো এবারও আগাম প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। গণসচেতনতার জন্য প্রত্যেক ওয়ার্ডে দুর্যোগ মোকাবেলা কমিটি গঠন, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট, রেডক্রস, সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, এনজিওসহ সর্বস্তরের লোকজন নিয়ে দুর্যোগ প্রতিরোধে প্রস্তুত থাকতে আহবান জানান জেলা প্রশাসক।
তিনি সবাইকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, যারা পাহাড়ের খাস জমি দখল ও বিক্রি করে এবং জমি নিয়ে দালালি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় বিগত দিনে এনজিওগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সামনে যেন স্থানীয় এনজিওগুলো সব ধরণের দুর্যোগে জনগণের পাশে থাকে, সেই আহবান জানান জেলা প্রশাসক। তিনি সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস, এলজিইডি, বিদ্যুৎ বিভাগ, সড়ক ও জনপথসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।