পটিয়ায় পুকুরে ট্রাক, শ্রমিক নিহত

41

পটিয়ায় একটি মিনি ট্রাক উল্টে মোহাম্মদ শাকিল (২৪) নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় মহাসড়কের পটিয়া উপজেলার আমজুরহাট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আরো ৪ জন আহত হয়েছেন। নিহত শ্রমিক মোহাম্মদ শাকিল আনোয়ারা উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের পুত্র। আহতরা হলেন আকাশ (১৩), কাশেম (২৪), মিজান (২৪) ও মো. কাদের (২৮)। এর আগে গত রবিবার বাইপাস সড়কে দুর্ঘটনায় এক ইউপি সদস্য নিহত হন। গত কয়েক মাসে বাইপাস সড়কে প্রায় ১৬ জন নিহত এবং শতাধিক যাত্রী ও পথচারী আহত হন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। এদিকে বাইপাস সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধে স্পিডব্রেকার স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে বাইপাস সড়কে ব্যারিকেড দেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে লোকজনকে সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
জানা গেছে, পটিয়া থেকে একটি মালবাহী মিনি ট্রাক চট্টগ্রামমুখী (চট্টমেট্রো ড-১১-১৩৭২) গতকাল সকালে মহাসড়কের পটিয়া উপজেলার আমজুরহাট এলাকা হয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি পুকুরে পড়ে যায়। এতে শ্রমিক শাকিল ঘটনাস্থলে নিহত হন এবং অন্য ৪জন আহত হন।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও এসআই মুজিবুর রহমান জানান, মিনি ট্রাক উল্টে শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় ট্রাকটি উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে বার বার দুর্ঘটনার কারণে পটিয়ার বাইপাস সড়কের কচুয়াই-বৈলতলী পয়েন্টে গাছের গুড়ি ফেলে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। এ সময় সড়কে সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকে। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় দুইঘণ্টা বিক্ষুব্ধ জনতা সড়ক অবরোধ করে প্রাণহানিরোধ ও স্পিডব্রেকার নির্মাণের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের ¯েøাগান দেয়। খবর পেয়ে পটিয়া থানা, পটিয়া ট্রাফিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে লাঠিপেটা করে। পরে পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অবরোধকারীদের নিজ কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী, ইউএনও এবং পুলিশের সাথে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে ইউএনও বিক্ষুব্ধদের দাবির প্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দোহাজারীর নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাইপাস সড়কের ৪টি পয়েন্টে ৮টি জাম্প স্টিক নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান, পটিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার মোহাম্মদ খালেদ, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সদস্য আবু ছালেহ মুহাম্মদ শাহরিয়ার, আরিফুল ইসলাম, মোতাহের ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, মো. রুবেল, সাইফুল ইসলাম, শাহ আলম, কালু মিয়া, সাইফুল, আবু জাফর, মো. জমির, জাহাঙ্গীর সওদাগর, জাহাঙ্গীর মেম্বার, হাবীব মেম্বার, নজরুল মেম্বার, মোরশেদ ফারুকী, সাবেক মেম্বার শামসু সওদাগর, মনোয়ারা বেগম, সাজেদা বেগম, বোরহান উদ্দীন, শাহ নেওয়াজ, আবদুল হান্নান, বাবলু, শাহিন, নাফী, সজিব, রাসেল, মহিউদ্দীন, রাফি, হৃদয়, অভিশেক, জয়, শমিত বড়ুয়া ও বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল হাসান জানান, আন্দোলনকারীরা সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করেছে। আমরা উপস্থিত হয়ে বৈঠক করে তাদের দাবি মেনে নিয়েছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাইপাস সড়কের দুর্ঘটনাকবলিত চারটি পয়েন্টে আটটি জাম্প স্টিক নির্মাণ করা হবে। তাছাড়া প্রতি সপ্তাহে দুইদিন বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) জব্বারুল ইসলাম জানান, সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরে কিছু যুবক উচ্ছৃঙ্খলতার চেষ্ঠা করলে তাদের লাঠিপেটা করা হয়।