নীলুফার ইয়াসমীন

8

 

সঙ্গীতশিল্পী। নীলুফার ইয়াসমীন উচ্চাঙ্গসঙ্গীত, নজরুলসঙ্গীত, অতুলপ্রসাদের গান, দ্বিজেন্দ্রগীতি, রজনীকান্তের গানে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। নীলুফার ইয়াসমীন ১৯৪৮ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি এক সঙ্গীতসমৃদ্ধ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সঙ্গীতচর্চায় শৈশব থেকেই পিতামাতার সাহচর্য পেয়েছেন। নীলুফার ইয়াসমীন ছিলেন পাঁচ বোনের মধ্যে চতুর্থ এবং তাঁরা সকলেই নিজ নিজ শিল্পক্ষেত্রে প্রথিতযশা শিল্পী। বড় বোন ফরিদা ইয়াসমীন ও মেজ বোন ফিরোজা ইয়াসমীন উজ্জ্বল সঙ্গীত প্রতিভা। সেজ বোন নাজমা ইয়াসমীন অভিনয়-আবৃত্তি জীবনে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। ছোট বোন সাবিনা ইয়াসমীন দেশের অন্যতম খ্যাতনামা কণ্ঠশিল্পী। নীলুফার ইয়াসমীন উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের পাশাপাশি টপ্পা, ঠুংরি, কীর্তন ও আধুনিক গান-এ অসামান্য ভূমিকা রাখেন।
নীলুফার ইয়াসমীন ১৯৬৩ সালে এসএসসি এবং ১৯৬৫ সালে এইচএসসি পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৮ সালে সমাজবিজ্ঞানে বিএ (সম্মান) এবং ১৯৭০ সালে একই বিষয়ে এম এ পাস করেন। ১৯৬৪ সালে পন্ডিত পিসি গোমেজের নিকট উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিক্ষা শুরু করেন। পরে পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার সঙ্গীত গুরু, শ্রী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীমতি মীরা বন্দ্যোপাধ্যায়, ওস্তাদ সগীরউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ ফজলুল হক এবং ওস্তাদ এ দাউদ প্রমুখের নিকট সঙ্গীত বিষয়ে তালিম নেন। শেখ লুৎফর রহমান ও সুধীন দাশের নিকট তিনি নজরুল সঙ্গীতের শিক্ষা নেন।
নীলুফার ইয়াসমীন বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ ও চলচ্চিত্রকার খান আতাউর রহমান-এর (১৯২৮-১৯৯৭) সহধর্মিনী। অতি অল্প বয়সে ঢাকা বেতার দিয়ে শুরু করে তিনি মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত বেতার ও টেলিভিশনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৭৫ সালে বাচসাস পুরস্কার এবং ১৯৮৬ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। নীলুফার ইয়াসমীন দুরারোগ্য ক্যানসার ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ২০০৩ সালের ১০ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। তাঁকে সঙ্গীতে একুশে পদক ২০০৪ (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। সূত্র: বাংলাপিডিয়া