নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউটিউবে অপপ্রচার চলছে

23

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, সাধু সাবধান। ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। আগামী দেড় বছর ষড়যন্ত্রই দেখতে হবে। তাদের মূল অস্ত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। তারা ইউটিউবকেই অপপ্রচারের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে। দেশ-বিদেশে বসে সরকার বিরোধী নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদের বিভিন্ন বক্তব্য খন্ডিতভাবে তুলে ধরে টুইস্ট করছে। তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করে সুযোগ নিয়ে ক্ষমতায় আসতে চাইছে। এসব থেকে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।
গতকাল বিকালে নগরীর রীমা কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে ষড়যন্ত্রের পেছনে যারা ছিল তারা স্বাধীনতাকে মানেনি। তারা স্বপ্ন দেখেছিল দেশের স্বাধীনতা ধ্বংস করে পূর্বের জায়গায় ফেরত যাবে। ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি। তারা প্রধানমন্ত্রীকেও ২১ আগস্ট হত্যা করতে চেয়েছিল। ওইসময় অনেক নেতাকর্মীকে হারিয়েছি। আরও অনেক নেতা পঙ্গু অবস্থায় আছেন। তারা এখনো স্বাধীনতার পক্ষে যেতে পারেনি। তারা এখনো বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখছে। ক্ষমতায় কে আসবে, কে যাবে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না। যারা আগামী দিনে ক্ষমতায় আসতে চাইছে তাদেরকে বাংলার জনগণ এখনো ভুলেনি। তখন হাওয়া ভবন থেকে রাষ্ট্র পরিচালিত হতো। হাওয়া ভবনের নাম ছিল ১০ পার্সেন্ট, ২০ পার্সেন্ট।
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পূর্বের চেয়ে মজবুত জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী জাবেদ বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বার সরকার গঠনর করে। সেসময় সরকার গঠনের পর এটি ধারাবাহিক সরকার। বিগত বিভিন্ন নির্বাচনে জয়ী হয়ে ১৩ বছর ক্ষমতায় আছি। এসময় আমরা স্থিতিশীল দেশ দেখেছি। যেটি ’৭৫ পরবর্তী সময়ে দেখিনি। আমরা তখন দেখেছি ক্যু ও হত্যাযজ্ঞ। বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা দিয়েছেন, বঙ্গকন্যা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন অর্থনৈতিক মুক্তি। সামনে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে আমাদের। তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সারা বিশ্বের দেশগুলোয় তার প্রভাব পড়েছে। আজকে তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম উর্ধ্বমুখি। আমরা মানুষকে কিভাবে শান্তিতে রাখা যায় তার জন্য কাজ করছি। বাংলাদেশ একজন সফল মানুষের হাতেই আছে। শোকের এ মাসে শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে যে কোনো কিছুর বিনিময়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরেই দেশের স্বার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, শোককে শক্তিতে পরিণত করার যে প্রতিজ্ঞা, প্রত্যয়ের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে এখানে এসেছি। বঙ্গবন্ধুকে শুধু হত্যা করা হয়নি, ইতিহাস থেকে মুছে দেয়ার চক্রান্ত করা হয়েছে। মৃতের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী বঙ্গবন্ধু। সেদিন আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্রে নাম থাকায় আওয়ামী লীগের সনদ বাতিল করতে চেয়েছিল জিয়া। বিশ্ব রাজনীতিতে মৃত রাজনীতিক হিসেবে বঙ্গবন্ধু মুজিবের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। বঙ্গবন্ধু আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী একটি নাম। তাই স্লোগান হবে শোক হোক শক্তি, শেখ হাসিনায় মুক্তি।
বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু বলেন, যখন কোনো নির্বাচন আসে তখন বিএনপি জামায়াত ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্র করে। দেশকে বিশ্বের কাছে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করে। তারা বারবার পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে বঙ্গবন্ধু কন্যা আবারও ক্ষমতায় আসবে।
বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু বলেন, সেদিন বিপথগামী সামরিক অফিসারদের নেতৃত্বে জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল। ’৭০ এর নির্বাচন, ’৭১-এ যারা পরাজিত হয়েছিল তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। স্বাধীনতার পর দেশ যখন ভঙ্গুর অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়াচ্ছিল তখনই ষড়যন্ত্র করে জাতির পিতাকে হত্যা করা হলো। ’৭৫ থেকে ’৮১ সাল পর্যন্ত বহু অফিসারকে হত্যা করেছিল জিয়া। আর্মি থেকে সমস্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নিঃশেষ করেছে। আগস্ট মাস এলেই বিএনপি খুনের নেশায় মেতে উঠে। ’৭৫-এ তাই হয়েছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টও ২৪ জনকে হত্যা করেছে। সেদিন প্রধানমন্ত্রীকে নেতাকর্মীরা মানবঢাল তৈরি করে বাঁচিয়েছিল। জিয়াউর রহমান খুনের সাথে জড়িতদের পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চাকরি দিয়েছেন। এসব কুকর্মের জন্য জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার হওয়া উচিত।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. জোবাইরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মো. গালিব সাদলীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন মনসুর, প্রদীপ দাশ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. ফারুক আমজাদ, ড. জমির উদ্দিন সিকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম আজিম, সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবু সুফিয়ান, সাতকানিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি এম.এ মোতালেব, বাঁশখালী আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল গফুর, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য উম্মে সালমা মুনমুন, তারেক মাহমুদ চৌধুরী পাপ্পু, রাহুল বড়ুয়াসহ জেলা ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃবৃন্দ।