নারী ইউপি সদস্যের মাথা ফাটিয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী

29

রাঙামাটির লংগদুতে সংরক্ষিত আসনের নারী ইউপি সদস্য ও তার স্বামীর মাথা ফাঁটিয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী। ১৯ অক্টোবর উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের গুলশাখালী বাজারে এ ঘটনা ঘটনা ঘটে। সোমবার সকালে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন, গুলশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য শাহিনা বেগম। এ সময় তার স্বামী নাজিম উদ্দিন এবং তার বোন ও মামলার বাদী হোসনে আরা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
শাহিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, তিনি ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যার দিকে তার ওয়ার্ড এলাকার গুলশাখালী বাজারের ইউপি কার্যালয়ের সামনে সরকারের বরাদ্দ দেয়া দুস্থ পরিবারের মধ্যে ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করছিলেন। ওই সময় হঠাৎ সদলবলে হাজির হয়ে প্রত্যেককে পাঁচটি করে ১০ জনের জন্য ভিজিএফ কাড দেয়ার দাবি করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহিমের পোষ্য সন্ত্রাসীরা। অন্যথায় ভিজিএফ কার্ড বিতরণ বন্ধ রাখতে হবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা।
পরে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ইউপি সদস্য শাহিনা বেগমরে স্বামী নাজিম উদ্দিনের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় আগে ওৎপেতে থাকা রহিম চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসীরা। ওই সময় এলাপাতারি লোহার রড ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে শাহিনা বেগমের স্বামী নাজিম উদ্দিনের মাথা ফাটিয়ে এবং পায়ের রগ কেটে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা। স্বামীকে বাঁচাতে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল গিয়ে হাজির হলে ইউপি সদস্য শাহিনা বেগমকেও মাথা ফাটিয়ে গ্রæতর আহত করা হয়। নাজিম উদ্দিনের কাছে থাকা গরু বিক্রির ৬৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। পরে শাহিনা বেগম ও তার স্বামী নাজিম উদ্দিনকে উদ্ধার করে লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। পরে গুরুতর অবস্থায় দু’জনকেই রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গতকাল মঙ্গলবার শাহিনা বেগম বলেন, ঘটনার বিষয়ে লংগদু থানায় মামলা করতে গেলে আসামিরা প্রভাবশালী বলে মামলা নেয়নি পুলিশ। ঘটনার দুই দিন পর ২১ অক্টোবর শাহিনা বেগমের বোন হোসনে আরা বেগম বাদী হয়ে রাঙ্গামাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার আসামিরা হল- আবদুল গনি (৫২), বাবুল মিয়া (৪০), জিল্লুর রহমান (৫০), রেজাউল টেইলার (২৩), হানিফ মিয়া (৩২), সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহিম ও হেলাল উদ্দিন।
ইউপি সদস্য শাহিনা বেগম আরও অভিযোগ করে বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহিম ১৯৭১ সালে রাজাকার ছিলেন। ওই সময় তার (শাহিনা বেগম) নানাকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছিলেন রহিম চেয়ারম্যান। ওই ঘটনায় রহিম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে আবদুর রহিম বলেন, ঘটনার বিষয়টি আমি শুনেছি। কিন্তু কী কারণে ঘটেছে, তা আমি কিছুই জানি না। প্রকৃত ঘটনা হলো- ওই নারী ইউপি সদস্য ভিজিএফ কার্ড দেয়ার নামে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। তার জেরেই ঘটনাটি ঘটতে পারে। আর আমার বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে একটি মিথ্যা মামলা হয়েছে। সেটিকে কেন্দ্র করে বারবার আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করা হয়ে থাকে।