নতুন বছরে খোঁড়াখুঁড়ি থেকে সরছে ওয়াসা

92

নতুন বছরের শুরু থেকে স্বস্তি মিলবে নগরবাসীর। কারণ নগরজুড়ে ওয়াসার চলমান খোঁড়াখুঁড়ি থেমে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কিছু সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। তবে আপাতত ১৩টি পয়েন্টের সংযোগ স্থাপনের কাজ ছাড়া অন্য খোঁড়খুঁড়ির কাজ করবে না ওয়াসা। আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নগরীর প্রায় সব রাস্তায় চলেছে ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি। একই রাস্তায় একবার দুইবার বা ততোধিক বারও পড়ছে ওয়াসার কোপ। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ধুলাবালুতে ঢেকে যায় সড়ক। পথচারীদের দুর্ভোগও বাড়ে কয়েকগুণ। দুর্ভোগের মাঝে কোথাও কোথাও আবার পুরোপুরি সড়কও বন্ধ রাখা হয়েছে। ওয়াসার বিশাল কর্মযজ্ঞ চালাতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে জনজীবন। ওয়াসার চলমান দুটি প্রকল্পের কারণেই এসব খোঁড়াখুঁড়ি। যা আগামী ২০২১ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকার কথা। রাস্তা কেটে মাটির গভীরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বড় আকারের পাইপলাইন। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ চালাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে। সামনে সিটি নির্বাচনকে ঘিরে আপাতত প্রকল্পের খোঁড়াখুঁড়ির কাজ বন্ধ রাখতে ওয়াসাকে অনুরোধ জানায় সিটি করপোরেশন। কিন্তু চলমান প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার পক্ষে নয় ওয়াসা। কারণ কাজ বন্ধ করলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা যাবে না। এতে ওয়াসা মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি অবহিত করে। এখন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে ওয়াসা। ওয়াসার সিডব্লিওএসপি প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশন ডিসেম্বর থেকে কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করে পত্র দেয়। আমরা বলেছি, মার্চের মধ্যে আমাদের কাজ শেষ করতে হবে। এখন মন্ত্রণালয় দুই সংস্থাকে নিয়ে বসবে। মন্ত্রণালয় থেকে একটা সিদ্ধান্ত দিবে। সে অনুযায়ী কাজ হবে।
তিনি বলেন, আপাতত আমরা ১৩টি পয়েন্টে কালভার্ট ক্রসিংয়ের কাজ করছি। বাকি কাজগুলো বন্ধ আছে। বহদ্দারহাট থেকে চকবাজার, জামালখান, সদরঘাট হয়ে বন্দর পর্যন্ত ১৩টি পয়েন্টের কাজ হয়ে গেলে আমরা পাইপলাইনে পানি দিতে পারবো। তখন পতেঙ্গায় পানি চলে যাবে। আমরা চাইবো জানুয়ারি থেকে অন্তত ভিতরের সড়কের কাজগুলো যেন করতে পারি। এতে আমাদের কাজ অনেক এগিয়ে যাবে।
দুটি প্রকল্পের অধীনে বর্তমানে নগরীতে পাইপলাইন স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ফলে দুই প্রকল্পের জন্যই চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। ২০১৫ সাল থেকে চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন ও স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় নগরে ১৬০ কিলোমিটার নতুন পাইপ লাইন বসানোর কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। ২০২০ সালের জুনে শেষ হতে যাওয়া এ প্রকল্পের অধীনে এখনো কিছু এলাকায় পাইপলাইন স্থাপনের কাজ বাকি রয়েছে। অন্যদিকে কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের জন্য প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার পাইপ বসানোর কাজ শুরু। এ প্রকল্পটির মেয়াদ রয়েছে ২০২১ সাল পর্যন্ত। এ প্রকল্পের অধীনে এখনো দেড়শ কিলোমিটারের বেশি পাইপলাইন স্থাপন বাকি রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শুধুমাত্র রাতের বেলায় করার কথা থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে দিনের বেলাতেও কাজ করা হচ্ছে। আবার চলাচলের রাস্তা খোলা রাখার কথা থাকলেও সড়কের আকার ছোট হওয়াতে রাস্তা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছে ওয়াসা। এতে প্রতিনিয়ন দুর্ভোগে পড়ছেন পথচারীসহ এলাকাবাসী।