নিজস্ব প্রতিবেদক
নগরীতে অস্ত্রশস্ত্রসহ চোর চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা দোকান বা মার্কেটের সামনে ছাতা কিংবা কাপড় দিয়ে আড়াল তৈরি করে চুরি করে। মাত্র পাঁচ মিনিট সময় পেলেই তারা চুরি করে পালিয়ে যেতে পারে। গতকাল শুক্রবার ভোরগত গভীর রাত ২ টার দিকে নগরীর আকবরশাহ থানার ঈগল স্টার টেক্সটাইল মিলের পাশ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তারা চুরি-ডাকাতির জন্য জড়ো হয়েছিল বলে জানা গেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন অলি আহাম্মদ (৩৫), মো. জামাল (৩৭), বাছির হোসেন (৩২), মো. হাসান (৩২), ইমরান হোসেন (২৮) এবং মো. সোহাগ (২৮)। তাদের সবার বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। তাদের কাছ থেকে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র-কার্তুজ, খেলনা পিস্তল, ছোরাসহ চুরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, গ্রেপ্তার ছয়জন একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের চক্রে আরও সদস্য আছে। তারা শুধু চট্টগ্রাম শহরে চুরি করে এমন নয়, কুমিল্লা, ঢাকা মহানগর, বরিশালেও চুরির ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে। এর আগে কয়েকবার তারা বিভিন্ন ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে। জামিনে বেরিয়ে এসে আবারও চুরিতে জড়িয়ে পড়ে। চোর হলেও তাদের কাছে অস্ত্র থাকে। অস্ত্র ঠেকিয়ে ডাকাতিও তারা সংঘটিত করে বলে আমর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি।
অভিযানে অংশ নেয়া আকবরশাহ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্ণব বড়ুয়া চুরির কৌশল সম্পর্কে বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তাদের চুরির পন্থা দেখে আমাদের বিস্মিত হতে হয়েছে। ৪-৫ জন বন্ধ অবস্থায় থাকা দোকান বা মার্কেটের সামনে আসে। দু’জন লুঙ্গি ঠিক করার মতো করে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে লুঙ্গি মেলে আড়াল করে। আরেকজন মার্কেটের সামনে ছাতা খুলে ভেতরটা আড়াল করে, যাতে সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়া লোকজন কিছু খেয়াল করতে না পারে। বাকি দু’জন দ্রæত শার্টার কেটে ভেতরে ঢুকে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, এই অভিনব প্রক্রিয়ায় তারা নগরীর বিভিন্নস্থানে আরও বেশকিছু চুরি করেছে। এভাবে চুরি করতে তাদের সর্বোচ্চ সময় লাগে পাঁচ মিনিটের মতো। চুরির পর দ্রæত ওই এলাকা ছেড়ে চলে যায়। তারা কখনও রিকশা চালকের বেশে থাকে, কখনও বা পথচারীর বেশে টার্গেট করা দোকান-মার্কেট রেকি করে। এরপর চুরি করতে নামে। কোথাও ধরা পড়ে যাবার মতো অবস্থা তৈরি হলে তারা অস্ত্র ঠেকিয়ে ভয় দেখিয়ে নির্বিঘেœ সেখান থেকে চলে যায়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ জুন এ ধরনের আরেকটি চক্রের তিন সদস্যকে আকবরশাহ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল।