দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে লাগবে ১০ আঙ্গুলের ছাপ

10

পূর্বদেশ ডেস্ক

আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে ১০ আঙ্গুলের ছাপ লাগবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যাদের ১০ আঙ্গুলের ছাপ দেওয়া নেই আগামী জানুয়ারি থেকে তাদের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হবে। তবে যারা স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করার সময় দশ আঙুলের ছাপ দিয়েছেন, তাদের আর দিতে হবে না। এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর এই তথ্য জানিয়েছেন।
স¤প্রতি অনুষ্ঠিত এক মাসিক সমন্বয় সভাতেও তিনি বিষয়টি উল্লেখ করেন। ওই বৈঠকে তিনি বলেন, বিধান মোতাবেক ১৫ (পনের) বছর পর ভোটারদের বায়োমেট্রিক আপডেট করতে হবে। তাই আগামী বছরে আমাদের এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া প্রয়োজন। খবর বাংলানিউজ।
এর আগে ১ আগস্টের ওই বৈঠকে এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল শনিবার নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের ত্রৈমাসিক সভাতেও প্রসঙ্গটি তোলেন এনআইডি মহাপরিচালক। তিনি বলেন, একটি কথা বলি, আমরা যেহেতু আগামী ভোট (জাতীয় নির্বাচন) আরো সুন্দর করতে চাই, এ কারণে আমরা ফিঙার প্রিন্ট কিন্তু আপডেট করবো। যারা স্মার্টকার্ড নিয়েছেন, তারা দশ আঙুলের ছাপ দিয়েছেন। যারা দশ আঙুলের ছাপ দেয়নি, আগামী জানুয়ারি থেকে আমরা দশ আঙুলের ছাপ নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা কমিশনের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করছি। চলমান হালনাগাদ শেষে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের (২০২৩ সালের ২ মার্চ) পরপরই এই কার্যক্রমে যাব। এ সময় তিনি কর্মকর্তাদের ভোটার তালিকা হালনাগাদের ক্ষেত্রে বেশ কিছু দিক-নির্দেশনা দেন।
একেএম হুমায়ুন কবীর বলেন, যারা নতুন ভোটার-এসএসসি, পিএসসি, জেএসসি প্রয়োজনে জন্ম নিবন্ধন দেখে নিচ্ছি, যাতে ভুল না হয়। একটি বিষয় সতর্ক থাকতে বলবো, যারা বয়স্কদের যেন সচেতনভাবে যাচাই-বাছাই করে ভোটার করা হয়।
বিভিন্ন বাহিনীর চাকরিজীবি রেশন তোলার জন্য তিন-চার বছর পর একজন স্ত্রীর নাম দিয়ে থাকেন। এখন সত্যিকার যখন বিয়ে হয়, তখন যার সঙ্গে বিয়ে হয় সেই নামের সঙ্গে ওই আগের নামের মিল থাকে না। পেনশনে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তখন সংশোধনের জন্য আসেন।
আপনারা এসব ক্ষেত্রে খুব সতর্ক হবেন। যদি বয়স্ক কেউ ভোটার হন, দুটি জন্ম সনদ থাকে, তবে ধরে নেবেন- ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। আর যদি একেবারে নতুন ভোটার হন তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সনদ তো রয়েছে। সেটা ফলো করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ওয়ারিশন সনদটা ভালো করে দেখে নেবেন। যেন ছোট ভাই, বড় না হয়ে যান। এসব বিষয় খেয়াল রাখবেন।
তিনি বলেন, আমরা প্রবাসীদের জন্য সব সময় অগ্রাধিকার দিচ্ছি। তাদের জন্য একটা পৃথক ডেস্ক খুলেছি। তার অর্থ এই নয়, রোহিঙ্গার দ্বিতীয় জেনারেশন বা সৌদি আরব থেকে এসে ভোটার হয়ে যাবে।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, আমাদের চারপাশে দালাল শ্রেণি আছে। প্রতিনিয়ত আপনাকে আমাকে বিক্রি করছে তারা। এদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়বেন না।
ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৈঠকে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
সভায় ঢাকার আঞ্চলিক পর্যায়ের এনআইডি সংশোধন, স্থানান্তর ইত্যাদি সংক্রান্ত আবেদনের তথ্য তুলে ধরা হয়। এ পর্যন্ত মোট আবেদন পড়েছে ৩৯ হাজার ৩৫৩টি। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ২০ হাজার ৯৪৫টি। আর অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে ১৮ হাজার ৪০৮টি আবেদন। সবচেয়ে বেশি আবেদন অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে ঢাকা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ৭ হাজার ৬৪৮টি।
দেশে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৩২ লাখ। এদের মধ্যে স্মার্টকার্ড পেয়েছেন ৬ কোটির মতো নাগরিক। প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি নাগরিককে দিতে হবে দশ আঙুলের ছাপ।