দেড় বছর পর চবি’র হলে উচ্ছ¡সিত শিক্ষার্থীরা

3

মিজানুর রহমান, চবি

দীর্ঘ দেড় বছর পর খুলে দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সব আবাসিক হল। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশ করতে শুরু করে। এ সময় তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে কোনো কোনো হলে শিক্ষার্থীদের স্যানিটাইজার, মাস্ক, কলম ও চকলেট উপহার দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন পরে হলে ফিরতে পেরে বেশ উচ্ছ্বসিত অবস্থায় দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পর গত বছরের মার্চ মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসিক হলও বন্ধ হয়ে যায়৷ ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল কার্যক্রম ও অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হয়। এরপর সশরীরে পরীক্ষা এবং সর্বশেষ গত শনিবার শাটল ট্রেন এবং সোমবার আবাসিক হল চালু হয়। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এএফ রহমান, আলাওল ও প্রীতিলতাসহ কয়েকটি হল ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে হলে প্রবেশ করে। এ সময় হলের প্রধান ফটকে তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় এবং বেশকিছু উপহারসামগ্রী প্রদান করা হয়। আবার কিছু কিছু হলে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত ভোজেরও ব্যবস্থা ছিলো। প্রশাসন জানায়, যে সকল শিক্ষার্থীদের কমপক্ষে একডোজ টিকা নিয়েছে তাদেরকে হলে প্রবেশ ও অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আবার অনুমতিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ছাড়া কাউকে হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এছাড়া হলে ওঠা বৈধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের কোনো আত্মীয় কিংবা অনাবাসিক শিক্ষার্থী সঙ্গে না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো আবাসিক শিক্ষার্থীর সর্দি-জ্বর কিংবা কাশির ল²ণ দেখা দিলে দ্রুত কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে এবং দ্রæত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের হলে ওঠার কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসানসহ সংশ্লিষ্ট হলের প্রভোস্টরা।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ড. শিরীণ আখতার বলেন, দীর্ঘদিন পর হল খুলছে। বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে অন্যরকম আমেজ বইছে। শিক্ষার্থীরা তাদের আপন নীড়ে ফিরেছে। আমরা তাদের বরণ করতে সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আশা করছি, করোনার ঘাটতি কাটিয়ে আমরা দ্রুত স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে পারব। শিক্ষার্থীরা এ বিশ্ববিদ্যালয়কে মুখরিত রাখবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
অনুভ‚তি প্রকাশ করতে গিয়ে খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তাসনিম জেসি বলেন, ঈদ ঈদ লাগতেছে। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সংবর্ধনা পেয়ে এতো খুশি লাগছে যে, হলে প্রথমবার ওঠার সময়ও এত খুশি লাগে নাই।
শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ ড. লায়লা খালেদা আঁখি বলেন, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। বহু দিন পর শিক্ষার্থীদের পদচারণায় হলে প্রাণ ফিরেছে। শিক্ষার্থীরা তাদের হলের পরিচয়পত্র এবং এক ডোজ টিকা গ্রহণের কার্ড দেখিয়ে প্রবেশ করেছে। তাদের বরণ করতে আমরা কিছু উপহার সামগ্রী দিয়েছি। এ ছাড়াও তাদের জন্য দুপুরে এবং রাতের খাবারের ব্যবস্থা ছিলো।