দেশে প্রথমবারের মতো ওমিক্রন শনাক্ত

5

পূর্বদেশ ডেস্ক
করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে বিশ্বজুড়ে এখন উদ্বেগ ছড়ানো ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত দুই রোগীর সন্ধান মিলেছে দেশে। তারা দুজনই নারী ক্রিকেটার; তারা আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে সফর করে স¤প্রতি দেশে ফিরে আইসোলেশনে রয়েছেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, গতকাল শনিবার ঢাকার শিশু হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বাংলাদেশে প্রথম ওমিক্রনের রোগী ধরা পড়ার কথা জানান।
একই দিনে আরেক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, ওই দুই খেলোয়াড়ের কারও কোনো ধরনের শারীরিক জটিলতা নেই, তারা ‘ভালো’ আছেন।
নতুন করোনা ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমণের পর অসংখ্যবার রূপবদল করলেও এক বছরের বেশি সময় পর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টই মহামারির মাত্রা ভয়াবহ করে তোলে। এরপর টিকা যখন মহামারি নিয়ন্ত্রণের আশা দেখাচ্ছে, তখন দক্ষিণ আফ্রিকায় ধরা পড়ে ভাইরাসটির নতুন রূপ ওমিক্রন।
এরপর আফ্রিকা মহাদেশ থেকে আসার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করে। এর মধ্যেই জিম্বাবুয়েতে নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ দল ঢাকায় পৌঁছানোর পর সব খেলোয়াড়দের পাঠানো হয় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে। সেখানে নমুনা পরীক্ষার পর দুজনের করোনা ভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসে।
তার ছয় দিন পর শনিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিশ্চিত করেন যে ওই দুই খেলোয়াড় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। তিনি বলেন, ওমিক্রনে আক্রান্ত দুজনই স্বাভাবিক আছেন। কারও কোনও ধরনের জটিল উপসর্গ নেই। আমরা কন্টাক্ট ট্রেসিং করছি, সবাইকে পরীক্ষার আওতায় এনেছি। যারা সঙ্গে ছিল বা সংস্পর্শে এসেছে, সবার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জিম্বাবুয়ে থেকে আসা আমাদের দুই নারী ক্রিকেটার; যাদের শরীরে ওমিক্রন ভাইরাস পাওয়া গেছে, তাদের আমরা কোয়ারেন্টিনে রেখেছি এবং তারা সুস্থ আছে। তাদের যা যা চিকিৎসা দরকার সেগুলো ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঝে মাঝেই পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে কী অবস্থায় আছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে হয়তো কিছু দিন সময় লাগবে। অন্তত ২ সপ্তাহ লাগবে। পুরোপুরি যখন সেরে উঠবে তখনই আমরা তাদের ছাড়তে পারবো।
দেশের বাইরে থেকে যারা আসবেন তাদের সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আফ্রিকার বাইরে ৬২টা দেশে এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে এই ওমিক্রন ভাইরাস। এটি খুবই দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে, কিন্তু উপসর্গটা মৃদু। এখন পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর সংবাদ আমরা পাইনি। ডেলটা ভাইরাসের থেকে বেশি ক্ষতিকারক নয়।
দক্ষিণ আফ্রিকা, যেখানে ওমিক্রনের প্রথম রোগী ধরা পড়েছিল, সেখানকার এক চিকিৎসক জানিয়েছিলেন যে এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের উপসর্গ মৃদু। আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজনও পড়ছে না।
ভারতে যে ৩৩ জনের মধ্যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, তাদের তেমন কোনো জটিলতা নেই বলে দেশটির স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ওমিক্রনের রোগীদের ক্ষেত্রে দুর্বল ভাব এবং গা ও মাথা ব্যথার উপসর্গই দেখা যাচ্ছে। তাদের অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায়নি, যেটা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল। ওমিক্রনে বিশ্বে এখন অবধি কারও মৃত্যুর নিশ্চিত খবরও পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডবিøউএইচও আমাদেরকে জানিয়েছে, আমরা যে সমস্ত টিকা ব্যবহার করছি, এই টিকাও ওমিক্রনকে প্রতিরোধ করার কাজ করে। আমরা চাইব, যারা এখনও টিকা নেয় নাই, তারা তাড়াতাড়ি যেন টিকা নিই।
ইতোমধ্যে ৭ কোটি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এরমধ্যে দ্বিতীয় ডোজ চার কোটির বেশি হয়ে গেছে। এখনও বেশ কিছু বাকি আছে, তারা যেন তাড়াতাড়ি টিকা গ্রহণ করে।