দেশের স্বাধীনতাকে নিজেদের মূলধন করে ফেলেছে আ.লীগ

12

স্বাধিনতার প্রেক্ষাপট এদেশের মানুষ ভুলে যাচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে এদেশের আপাময় জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। বাংলাদেশের রাজনীতি যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে স্বাধীনতা দিবসের গর্বিত দিনটিকে, গর্বিত কাজটিকে গর্হিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটটা আমরা ভূলে যাচ্ছি। এ প্রেক্ষাপটের মধ্যে মৌলানা ভাসানী, হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, কর্নেল ওসমানি, জিয়াউর রহমান আছেন। আরো অনেকের অবদান আছে। আজকে দেশের স্বাধীনতা একটি ব্যক্তি, একটি পরিবার, গোষ্ঠী ও একটি দলের হাতে। যেন তারা মূলধন পেয়েছে। এটাকে তারা নিজেদের মূলধন করে ফেলেছে।
তিনি গত রবিবার বিকেলে পাঁচলাইশস্থ শায়লা স্কয়ারে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রামের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহব্বায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে এবং ডা. শামীম আল মামুন ও ডা. ঈসা চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম ফজলুল হক, ডা. মো. গোফরানুল হক, একরামুল করিম, ডা. জাহিদ হোসেন শরীফ, এড. মফিজুল হক ভুঁইয়া, কমান্ডার শাহাবুদ্দিন ও মো. হারুনুর রশিদকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন।
খসরু বলেন, যখন স্বাধীনতা মনোপলি হবে, তখন এটা ক্ষতিকর জিনিস। বাজার যেরকম একচেটিয়া হলে ক্ষতিকর হয়, খদ্দেররা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারেও মনোপলি করতে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে একটি বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হয়েছে।
জিয়াউর রহমান দেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে খসরু বলেন, আমি যা বলেছি এসব তাজউদ্দীনের মেয়ের বইতে লেখা আছে। যে ফাদার অফ দ্যা নেশন ঠিক আছে, আমেরিকায় তো ফাদার অফ নেশন আছে, ফাউন্ডিং ফাদারও আছে। যে লোকগুলোর কথা আমি বলেছি এর বাইরেও অনেকেই আছেন। যাদের নাম ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবে আমাদেরকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তারা সবাই ফাউন্ডিং ফাদার্স। কারো ভূমিকা কম নয়। জিয়াউর রহমানের ভূমিকা হচ্ছে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি দেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা। উনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না?
খসরু বলেন, জেনারেল ওসমানি সাহেব মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। উনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না? তাজউদ্দিন সাহেব স্বাধীনতাকালীন মন্ত্রীসভার নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না।
প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আজকে আমরা লড়াই করছি গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের রক্ষার জন্য। অর্থনৈতিক যে বৈষম্য যেটা ৭১ এ ছিল সেটা এখন আরো বেশী হয়েছে। মানবাধিকার ও মানুষের মুক্তির যে লড়াই সেটা অব্যহত আছে।
এস এম ফজলুল হক বলেন, স্বাধীনতা কোন পণ্য নয়। স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে অনেক কথা থাকতে পারে। কিন্তু যে গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীনতা, সে গণতন্ত্র ছাড়া দেশের মানুষ ভাবতে পারে না।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং জিয়াউর রহমানের নাম সমার্থক। মুক্তিকামী জনতা সেদিন স্বাধীনতার ঘোষণা আশা করেছিল রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে। কিন্তু তাদের ব্যর্থতার কারণে সেদিন জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সরকার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
কাদের গণি চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম থেকে শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এই সত্যটিকে ইতিহাস থেকে মুছে দেয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছে সরকার। আওয়ামী লীগ সব সময় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।
জাহিদুল করিম কচি বলেন, আজ দেশে সুশাসন নেই। এ থেকে উদ্ধারের জন্য নিরপেক্ষ তত্ত¡াবধায়ক সরকার ছাড়া বিকল্প নেই।
ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী বলেন, সরকার মানুষের সমস্ত মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। তাই এই সরকারকে পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সদস্য সচিব ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, বার কাউন্সিলের সদস্য এড. এ এস এম বদরুল আনোয়ার, চবি অধ্যাপক এস এম নছরুল কদির, চমেক ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দিন, আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, সাবেক সভাপতি এড. এনামুল হক, জেলা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহ নওয়াজ, ইঞ্জি. সেলিম মো. জানে আলম, রোটারিয়ান জসিম উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার মো. ওসমান প্রমুখ।