দুদু মিয়াই তার দুধের বাচ্চাটিকে খুন করে

16

হাটহাজারী প্রতিনিধি

মৃত্যুদন্ডের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. আলাল প্রকাশ দুদু মিয়াকে ৬ বছর পর গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৭ চট্টগ্রাম এর হাটহাজারী ক্যাম্পের সদস্যরা। ২০১৬ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন তাজহাট এলাকায় ২২ মাসের এক কন্যা শিশু হত্যার ঘটনা ঘটে।
গত বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর খুলশী থানাধীন পশ্চিম খুলশী এলাকায় আত্মগোপনে থাকা দুদু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত দুদু মিয়া রংপুর জেলার কোতয়ালী থানার কিশামত গ্রামের মোসলেম উদ্দিন প্রকাশ প্লান্টুর ছেলে।গতকাল শুক্রবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-৭ এর হাটহাজারী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুর রহমান।
তিনি জানান, মৃত্যুদন্ডের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি দুদু মিয়া এবং তার স্ত্রী চট্টগ্রামের একটি গার্মেন্টস এ চাকরি করত এবং চাকরির সুবাধে চট্টগ্রামে বসবাস করত। তাদের দাম্পত্য জীবনে ২২ মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান ছিল। ভিকটিম শিশু কন্যা সন্তানটি তার নানীর কাছে রংপুরে থাকত। এরমধ্যে ২০১৬ সালে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে আলাল তার স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি রংপুরে বেড়াতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর একদিন তার মেয়েকে নিয়ে তাদের বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে নিয়ে যায়। ওই দিন রাতে শিশুটির মামা শুভ তার মোবাইল হতে তার ভগ্নিপতি দুদুকে ফোন করলে ফোন রিসিভ করে সে উল্টাপাল্টা কথা বলে।
পরবর্তীতে ১৭ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন তাজহাট এলাকায় একটি কলা বাগানে ছোট-ছোট বাচ্চারা খেলাধুলা করার সময় একটি শিশু কন্যার লাশ দেখে চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। উক্ত সংবাদ পেয়ে ভিকটিম শিশুটির মা, নানী এবং আত্মীয় স্বজন এসে লাশটি তাদের ২২ মাস বয়সী শিশু কন্যা বলে শনাক্ত করে। ভিকটিম শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে পোকা ধরা, গলায় একটি দাগ এবং কান ও নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়ার দাগ ছিল বলে র‌্যাব জানায়।
এ ঘটনায় ভিকটিম শিশুটির নানী বাদী হয়ে রংপুর জেলার কোতয়ালী থানায় দুদুকে এবং আরও ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পাষন্ড পিতা নিজ সন্তানকে নির্মমভাবে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার ঘটনাটি সেই সময় ব্যাপক আলোড়ন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ২০১৬ সালের ২৬ অক্টোবর দুদুকে আটক করে রংপুর থানা পুলিশ তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামি নিজ হাতে তার ২২ মাস বয়সী শিশু কন্যাকে হত্যা করেছে মর্মে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে স্বীকার করায় আদালত তাকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করে।
এদিকে, গ্রেপ্তারকৃত দুদু প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিচার চলাকালীন সময়ে সে বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয় বলে র‌্যাবকে জানায়। এরমধ্যে জামিন পেয়ে সে এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম এসে নিজেকে আত্মগোপন করে। গত বৃহস্পতিবার বিকালে সে র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ে।
অন্যদিকে, গ্রেপ্তারকৃত আসামি দুদুর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন চলছে বলে জানা গেছে।