তিন ওয়ার্ডে ১৪৭ করদাতার সুবিধামতো গৃহকর নির্ধারণ

32

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর চান্দগাঁওয়ের ফরিদার পাড়ার বাসিন্দা সৌরভ বড়ুয়ার আধাপাকা তিনটি ঘর রয়েছে। সেগুলোর জন্য ৮৪২ টাকা গৃহকর দিতেন। কিন্তু এবার তা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫ হাজার টাকা। যা তার আয়ের তুলনায় বেশি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সিটি করপোরেশনকে আর কর দেবেন না। পরে আপিলের সুযোগ দেওয়া হলে তাতে আবেদন করেন। এখন আড়াই হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তা নিয়ে সন্তোষ্টি প্রকাশ করে গৃহকর পরিশোধের সিদ্ধান্তে ফিরেছেন। সৌরভের মত প্রায় দেড়শ জনের গৃহকরের শুনানি হয়। তাদের অধিকাংশই শুনানি শেষে নির্ধারিত গৃহকরে সন্তোষ্টি প্রকাশ করেন।
গতকাল নগরীর বহদ্দারহাট এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের গৃহকরের আপিল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীসহ আপিল বোর্ডের সদস্যরা। বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই শুনানি চলে। এই সময়ে ১৪৭টি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়।
এ সময় বক্তব্যকালে মেয়র বলেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। নগরবাসীর গৃহকর থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব দিয়ে নাগরিক সেবা প্রদান করা হয়। প্রতি ৫ বছর অন্তর নতুন করে গৃহকর মূল্যায়নের বিধান থাকলেও বিগত ২০১১-১২ সালের পর কর মূল্যায়ন করা হয়নি। ২০১৭ সালে গৃহকরের যে মূল্যায়ন হয়েছিল তা নগরবাসীর আন্দোলনের কারণে স্থাগিত রাখা হয়েছিল। ২০২২ সালে এসে মন্ত্রণালয় স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে। এই সিদ্ধান্ত আমাদের মানতে হচ্ছে। তবে কোনোভাবে নগরবাসীর উপর যাতে বোঝা না হয় তার জন্য সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আপিল বোর্ড গঠন করা হয়। আপিল করলে যে অসংগতি আছে তা দূর করা এবং করদাতাদের সহনীয় পর্যায়ে কর নির্ধারণ করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। বিষয়টিকে আরো সহজ করার জন্য তিনটি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে মেয়র, কাউন্সিলর এবং আপিল বোর্ডেকে সঙ্গে নিয়ে করদাতাদের গণশুনানির ব্যবস্থা করা হয়।
মেয়র আরো বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে এই ধরনের শুনানি কার্যক্রম চলমান থাকবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, গৃহকর নিয়ে একটি মহল যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তা গণশুনানির পর অনেকাংশে কমে আসবে। আপিলে ৩শ জন করদাতা শুনানিতে অংশ নেন এবং তারা প্রত্যেকে সন্তোষ প্রকাশ করেন। জানা গেছে, আইন অনুসারে ২০১৭ সালে স্থাপনার ভাড়ার ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ করে চসিক। এতে গৃহকর প‚র্বের তুলনায় ৩ থেকে ১০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। এ নিয়ে করদাতা সুরক্ষা পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলনে নামে। আন্দোলনের মুখে ওই বছরে তা স্থগিত করেছিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তবে বর্তমান মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর অনুরোধে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর আদায় কার্যক্রম শুরু করে সিটি করপোরেশন।