নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বন্দরে সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প আটকের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি দুইটি কোম্পানির ব্যাংক হিসাব তলব করেছে ভ্যাট নিরীক্ষা গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি তদন্তের জন্যে ভ্যাট যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন মুনাওয়ার মুরসালীন (উপ-পরিচালক), আলমগীর হুসেন (সহকারী পরিচালক), মাশরেকী ইলিয়া কাজান (সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা) এবং আব্দুল আউয়াল (সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা)।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প আটকের ঘটনায় ভ্যাট গোয়েন্দার পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটির সার্বিক তথ্য পর্যালোচনা করে শীঘ্রই ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার প্রচেষ্টায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে গত ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামের এক প্রতিষ্ঠান মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প খালাসের অপচেষ্টার অভিযোগে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস বিভাগীয় ও ফৌজদারি মামলা দায়ের করে। আমদানিকারক পণ্যটি খালাস করতে পারলে সরকারের প্রায় ১১০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাতো।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, চট্টগ্রামের বাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানটি ইতোপূর্বেও সিএন্ডএফ এজেন্ট মধুমতি অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের সহায়তায় ৭টি বিল অব এন্ট্রিতে ‘এ-৪ পেপার’ ঘোষণায় পণ্য খালাস করেছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, এ প্রতিষ্ঠানটি ওইসব চালানেও একইরূপ জাল ব্যান্ডরোল খালাস করেছে। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কোন কোন সিগারেট ফ্যাক্টরি ওইসব ব্যান্ডরোল ব্যবহারের মাধ্যমে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি দিয়ে থাকতে পারে তা অনুসন্ধান করবে তদন্ত কমিটি।
ইতোমধ্যে গঠিত তদন্ত কমিটি বাপ্পু এন্টারপ্রাইজ নামীয় প্রতিষ্ঠানটির মূসক নিবন্ধন ফর্ম-২.১ এ উল্লেখিত ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেডের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির নামে বা কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যাংকের তথ্য পাওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) অনুরোধ করা হয়েছে।
এছাড়া কমিটি কর্তৃক একইভাবে অন্য আরেকটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের জুবলী রোডের আরাফাত এন্টারপ্রাইজ নামীয় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধেও একই কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এই প্রতিষ্ঠানটিও বিগত সময়ে একই সিএন্ডএফ এজেন্ট মধুমতি অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের সহায়তায় ৬টি বিল অব এন্ট্রিতে ‘এ-৪ পেপার’ ঘোষণায় পণ্য খালাস গ্রহণ করেছে। প্রতিষ্ঠান দুটির সার্বিক তথ্য পর্যালোচনা করে শীঘ্রই ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার প্রচেষ্টায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।