‘ঢাকায় মাদক বেচার টাকার দ্বন্দ্বে খুন হন ফয়সাল’

5

 

ছয়দিন আগে রাজধানী ঢাকার মিরপুরে প্রকাশ্যে যে খুনের ঘটনা ফেইসবুকে ছড়িয়েছে তা মাদক বিক্রির টাকার ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ঘটে বলে পুলিশের ভাষ্য। গত ১৬ মার্চ সন্ধ্যায় রিকশায় করে যাওয়ার সময় ফয়সাল ওরফে রাসেল নামের ৩০ বছর বয়সী এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রাশেদ ওরফে রানা নামে আরেক তরুণ আহত হন। স্থানীয় একটি ভবনের সিসি ক্যামেরায় হত্যার ঘটনা ধরা পড়ে। ঘটনার তদন্তে নেমে ঢাকা, পটুয়াখালী ও নেত্রকোণা থেকে এক তরুণীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
ডিএমপির ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ শুক্রবার বলেন, ফয়সালও একটি গ্যাংয়ের সদস্য ছিলেন। মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে নিজের গ্যাংয়ের সদস্যদের সঙ্গে মারামারির জের ধরে তিনি হত্যার শিকার হন।
গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়া ব্যক্তিরা হলেন- শাহিন ওরফে নাডা শাহিন (২৪), তার বোন তানজিলা (২৩), তানজিলার স্বামী শাহনেওয়াজ ওরফে কাল্লু (২৮), মুরাদ হোসেন (২৪), পারভেজ আহম্মেদ (২২), মো. ইয়াসিন (২০), সাইফুল ইসলাম সাইমন (৩০), নাসির উদ্দিন (২০), হৃদয় ওমর সাফি গন্ডার (২০) ও রাজিব মিয়া (২৫)। তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি, রামদা ও ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজ’র
পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন বলেন, ফয়সাল ও নাডা শাহিন একই অপরাধী চক্রের সদস্য। হত্যার আগেরদিন মাদক বিক্রির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে শাহীন ও তার বোন তানজিলার সঙ্গে ফয়সাল ও তার বন্ধুদের মারামারি হয়। পরে ওই ঘটনার বদলা নিতে শাহিন ওই এলাকার আরেকটি অপরাধী চক্রের নেতা রাব্বী ওরফে গালকাটা রাব্বীর শরণাপন্ন হয়। পরের দিন সন্ধ্যায় ফয়সাল ও তার বন্ধু রানাসহ চারজন রিকশায় করে পল্লবীর কমিউনিটি সেন্টারে ইফতার শেষে বাসায় ফিরছিরেন। নাডা শাহিন ও গালকাটা রাব্বীর অপরাধী চক্রের সদস্যরা চাপাতি, রামদা, সুইস গিয়ার (এক ধরনের ছুরি) নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।
ওই ঘটনার পর আহত রাশেদ ওরফে রানা (ফয়সালের বন্ধু) হাসপাতালে ঘটনার বর্ণনায় বলেছিলেন, ওই এলাকায় পুরাতন থানার সামনে তারা কয়েক বন্ধু মিলে ইফতার শেষে বাসার দিকে ফিরছিলেন। এ সময় স্থানীয় শাহীন ও কাল্লুসহ ৮-১০ জন ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাদের জখম করে।
তাদের আরেক বন্ধু সানাউল্লাহ বলেছিলেন, ঘটনার দিন বিকালে একই এলাকায় তানজিলাদের বাসার সামনে ফয়সাল ওরফে রাসেল গান গাইছিলেন। সেটাকে ব্যঙ্গ মনে করে তানজিলার স্বামী কালু ও তার ভাই শাহীন এ হামলা চালান।
হামলার একটি ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়েছে ফেইসবুকে। এতে দেখা যায়, একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা আটকে হঠাৎ ধারালো অস্ত্র হাতে কয়েকজন হামলা চালায়। এ সময় তাদের এলোপাতাড়ি আঘাত করতে দেখা যায়।
নিহত রাসেল পল্লবী থানাধীন ই বøকের সেকশন ১২ মুড়াপাড়ায় আটকেপড়া পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তার বাবার নাম শাহাদাৎ। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।
ওই হত্যার আসামিদের ধরতে কাজ করেছিল র‌্যাবও। শুক্রবার সন্ধ্যায় র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়, এ ঘটনায় রাব্বী ওরফে গালকাটা রাব্বী, আকাশ ওরফে টান আকাশসহ পাঁচজনকে নরসিংদী ও গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।
এদিন সকালে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলছেন, এই ঘটনার তদন্তে নেমে বেশ কয়েকজনের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে র‌্যাবের গোয়েন্দারা। এর মধ্যে গালকাটা রাব্বী, আকাশসহ আরও কয়েকজন সরাসরি হত্যায় জড়িত ছিলেন।