ট্রেন শিডিউল লন্ডভন্ড

5

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাইলেজ বা ভাতা বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে ধর্মঘট পালন করেছে রেলওয়ের রানিং স্টাফ কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। গতকাল সকাল ৬টা থেকে সারাদেশের কোথাও কোনো ট্রেন চলাচল করেনি। যে কারণে সাধারণ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এর আগে অনেক যাত্রী ভাড়া ফেরত নিয়ে অন্যত্র চলে যান। আবার কেউ কেউ বিলম্বিত যাত্রাতেই নির্ধারিত ট্রেনে স্টেশন ছেড়ে যান। তবে ভাড়ার টাকা ফেরত নিতে গিয়েও টাকা কর্তন করে নেয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন যাত্রীরা। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করলে পুনরায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। চট্টগ্রামে দুপুর ২টার পর থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় বলে জানিয়েছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ।
সমাঝোতা আলোচনার পর রেলওয়ের রানিং স্টাফ কর্মচারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, ‘রেলমন্ত্রীসহ প্রশাসনের সবার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা আমাদের দাবি-দাওয়াগুলো গুরুত্বের সঙ্গে শুনেছেন। সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে আমি সবাইকে কাজে যোগদানের জন্য আহব্বান জানিয়েছি।’
এর আগে গতকাল সকালে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়ার পর কমলাপুর রেলস্টেশনে যান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এসময় তিনি বলেন, যেসব দাবির কথা উঠেছে তা আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করবো। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা দেখা করবো। প্রধানমন্ত্রী ১৯ তারিখ আমাকে সময় দিয়েছেন। আমি এবং আমার সচিব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সব সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করবো। রানিং স্টাফরা পূর্বের মতো সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তাদের সব দাবি পূরণ হবে বলে আমি আশা করছি।
এদিকে চট্টগ্রামে সকাল থেকেই যাত্রীরা গন্তব্যে যাওয়ার জন্য রেলস্টেশনে ভিড় করতে থাকেন। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে সবগুলো ট্রেন প্লাটফর্মে বসা ছিল। সকালের সবগুলো ট্রেন আটকে গেলে যাত্রীদের টাকা ফেরত দেয়া হয়। এসময় অধিকাংশ যাত্রী টাকা ফেরত পেলেও টাকা কর্তনের প্রতিবাদ করেছেন। পরে ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর সকাল ৭টার সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন ২টা ৫৫ মিনিটে, ১২টা ৩০ মিনেটের মহানগর এক্সপ্রেস ৩টা ৫৫ মিনিটে ও চট্টলা এক্সপ্রেস সাড়ে ৮টার স্থলে ৩টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন ছেড়ে যায়। একইভাবে আরো কয়েকটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ে স্টেশন ছাড়তে পারেনি। একইসময়ে চট্টগ্রামে কোনো ট্রেন আসেনি। বিকালের দিকে সব ট্রেন স্বাভাবিক নিয়মেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
আগ্রাবাদের ব্যাংক কর্মকর্তা সাজু আহমেদ বলেন, ‘আমি সুবর্ণ এক্সপ্রেসের টিকিট কেটেছিলাম। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন না ছাড়ায় বিলম্ব হবে জেনে টিকিট ফেরত দিয়েছি। কিন্তু টিকিটের টাকা কেটে নেয়া হয়েছে। এটা অন্যায়।’
রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার শফিকুল ইসলাম বলেন, রানিং স্টাফরা ধর্মঘট করায় ট্রেন ছাড়তে পারেনি। দুপুর ২টার পর সব স্বাভাবিক হয়েছে। বিলম্বের কারণে যেসব যাত্রী চলে গেছেন তাদের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। যারা ধৈর্য ধরে অপেক্ষায় ছিলেন তারা দেরিতে হলেও নির্ধারিত ট্রেনে গন্তব্যে গেছেন।