জেলা পিকআপ-মিনিট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে টালবাহানার অভিযোগ

12

কক্সবাজার জেলা পিক-আপ মিনি ট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন নিয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি ও নানা টালবাহানার অভিযোগে এডহক কমিটির পদত্যাগ দাবী করেছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চকরিয়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি রিয়াজউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, বিগত ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে সুরাজপুর-মানিকপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিমকে আহবায়ক, অধ্যাপক রিদুয়ানুল হক, অধ্যাপক মুসলেহ উদ্দিন মানিক, নজরুল ইসলাম রাসেল ও জামাল উদ্দিন কোম্পানীসহ ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীর মধ্যস্থাতায় এ কমিটি গঠন করা হলেও নানা অজুহাতে ৪৫ দিন মেয়াদের স্থলে প্রায় পৌনে দু’বছর অতিবাহিত করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, পৌনে দুই বছরেও গঠিত এডহক কমিটি সদস্যদের নিয়ে কোন সভা/সমাবেশ তথা সংগঠনের স্বার্থে কিছুই করেনি। বরং নানা অজুহাতের কালক্ষেপন করে নির্বাচন নিয়ে লুকোচুরি খেলছেন এডহক কমিটির নেতারা। এছাড়া এডহক কমিটি গঠনের পর ৮ জন সদস্য মারা গেলেওতাদের মরনোত্তর ভাতাগুলো আটকে রেখেছেন তারা। এর ফলে গরীব এসব শ্রমিকের পরিবারের অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম জামালউদ্দিন বলেন, গঠিত এডহক কমিটি গঠনতন্ত্র বিরোধী, এ কমিটির বিষয়ে গঠনতন্ত্রে সুনির্দিষ্ট কোন উল্লেখ নেই। এ কারণে তারা যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, কথিত এডহক কমিটি ইতোমধ্যে আজিমুল হক আজিমকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অধ্যাপক মুসলেহউদ্দিন মানিককে সদস্য সচিব ও নজরুল ইসলাম রাসেলকে সদস্য করে একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনপূর্বক তফশীল ঘোষণা করেন। নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা করা হলেও সদস্যরা অফিসে গিয়ে কাউকে পায়না। ৭ অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত সকাল ১০ টা হতে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিতরণের সময় বেঁেধ দেয়া হয়। কিন্তু সদস্যরা ফরম সংগ্রহ করতে গিয়ে অফিস বন্ধের পাশাপাশি অফিসের দায়িত্বশীলদের মোবাইলও বন্ধ পান। ফলে ফরম না পেয়ে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক এমন অসংখ্য নেতা ফিরে আসেন।
সভাপতি রিয়াজউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত তীর্থের কাকের মত অপেক্ষা করে আমরা ফরম নিতে পারিনি। এডহক কমিটি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে ১ হাজার সদস্য বিশিষ্ট বৃহত্তর এ সংগঠনটির সদস্যদের সাথে নানাভাবে প্রতারণা করে আসছেন। শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত নির্বাচনী ফরম বিতরণ ও স্থগিত সংক্রান্ত কোন নোটিশও দেয়নি নির্বাচন কমিটি। ফলে আমাদের ধারণা, এডহক কমিটির নির্দেশনায় নির্বাচন পরিচলনা কমিটি নির্বাচন নিয়ে লুকোচুরি খেলা খেলছেন।
সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক নবীর হোসেন ছুট্টো বলেন, নির্বাচনের ফরম সংগ্রহ করতে গিয়ে ফরম নিতে পারিনি। শ্রমিকদের নিয়ে তালবাহনা নয়, বরং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নির্বাচন দিন। অন্যথায় শ্রমিকদের নিয়ে আমরা মহাসড়কে নামবো।
সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াসউদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘোষিত তফশীলে যে সময় দেওয়া হয়েছে সে সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রশাসনের নিকট স্মারক লিপির মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি রিয়াজউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নবী হোসেন ছুট্টো, সহসম্পাদক গিয়াসউদ্দিন, প্রচার সম্পাদক বেলাল উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ মো. শাহাবউদ্দিন, সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ছাবের, সাবেক লাইন সম্পাদক জিয়াউদ্দিন জিয়া, সাবেক মেম্বার আবদুল হামিদ, ইউনিট কমিটির সভাপতি সোহেল আবছার নাহিদ, সিনিয়র সদস্য মো. কাদের, বেলাল উদ্দিন, মো. আইয়ুবসহ অসংখ্য শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।