জাতিসংঘে সেমিনার একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি দাবি

5

পূর্বদেশ ডেস্ক

জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের ২৫ নম্বর কক্ষে আলোচনা, প্রতিবাদ ও বাংলাদেশ জেনোসাইড বিষয়ক ভিডিও প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ১৯৭১’এর জেনোসাইডের জাতিসংঘ স্বীকৃতির দাবিতে ৯ দিনব্যাপি কর্মসূচি শেষ হচ্ছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫১ বছর পর হলেও জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের ৫১তম সভার আলোচ্যসূচির ৩ নং এজেন্ডায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে সংঘটিত নৃশংস গণহত্যার বিষয়টি স্থান পেয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের ৫১তম অধিবেশনে বাংলাদেশ জেনোসাইড ইস্যুটি নিয়ে জোরালো আলোচনার পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে আমরা একাত্তর, প্রজন্ম একাত্তর, ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন (ইবিএফ) ও নেদারল্যান্ডসের প্রবাসী সংগঠন বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রæপ (বাসুগ) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নয় দিনব্যাপি নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে।
এ উপলক্ষে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, সমাবেশ, আলোচনা, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, পোস্টার প্রদর্শন, জাতিসংঘভূক্ত দেশগুলোর বাংলাদেশ মিশনে স্মারকলিপি দেয়াসহ দেশ-বিদেশে নানা কর্মসূচি পরিচালিত হয়েছে।
বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, শেরপুরের নালিতাবাড়ির বিধবা পল্লী, বরিশাল, দিনাজপুর, মানিকগঞ্জ, সিলেট ও মৌলভীবাজারে এসব কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। নিউইয়র্ক, ইংল্যান্ড, টরোন্টো, সিডনি ও অস্ট্রেলিয়াতে মানববন্ধন, সমাবেশ ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এসব কর্মসূচি আয়োজনের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা সংগঠন আমরা একত্তরের প্রধান সমন্বয়কারী হিলাল ফয়েজী বলেন, বাংলাদেশ গণহত্যার বিশ্ব স্বীকৃতি আদায়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, উত্তরবঙ্গ জাদুঘর, আমরা একাত্তর, প্রজন্ম একাত্তর, ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন (ইবিএফ) ও নেদারল্যান্ডসের প্রবাসী সংগঠন বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রæপ (বাসুগ) দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে।
হিলাল ফয়েজী বলেন, আমাদের দাবি আদায়ের পথে এসব কর্মসূচি আরেকটি ধাপ। জাতিসংঘের স্বীকৃতি নাপাওয়া পর্যন্ত এসব কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান,দাবি আদায়ের আন্দোলনে পররাষ্ট্র ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সক্রিয় সহযোগিতা করছে। খবর বাসস’র
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বাংলাদেশ জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ে পররাষ্ট্র সচিবকে আহŸায়ক করে সরকার এবং দেশ-বিদেশে আন্দোলনরত সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে কমিটি করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, এ দাবি আদায়ে সরকারকে এ্যাগ্রেসিভ ডিপ্লোমেসি এবং সমন্বিত ও সুচিন্তিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষেই এটি সম্ভব।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে বাংলাদেশের পার্লামেন্টে ২৫ মার্চকে জাতীয় গলহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা জাতিসংঘের কাছে ২৫ মার্চ নয়, পুরো নয় মাসের গণহত্যার স্বীকৃতি চাই। এ স্বীকৃতি আদায় করতে হলে বাংলাদেশ জেনোসাইডের স্বীকৃতির দাবিতে প্রথমে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর কাছে চিঠি দিতে হবে। তিনি সরকারকে প্রথম ভারতসহ বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছে স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, আগে আমাদের দাবির পক্ষে বিশ্ব জনমত তৈরি করতে হবে। তবেই এটা জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের পথ প্রশস্ত করবে।
আগামী ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সামনে সমাবেশ আয়োজন ও স্মারকলিপি দেয়া হবে বলে তিনি জানান।