এই সেদিনও দেশটা ছিল
অন্ধকারে ঢাকা,
শত্রু-ভয়ে খুব যে হতো
চুপটি মেরে থাকা।
বুটের আওয়াজ আসলে কানে
থাকতো সবাই চুপ,
এই এভাবে পার হয়েছে
রাত কি বা দিন খুব।
মারতো মানুষ- কাঁদতো সবাই
খুলতো না কেউ মুখ,
এসব দেখে কাঁদতো প্রিয়
বাংলাদেশের বুক।
পুত্র-নিকট ধর্ষণও হায়
করতো কত মাকে,
একলা তো নয়, হিংস্রগুলো
আসতো ঝাঁকে ঝাঁকে !
কেউ ছিলো না রুখতে ওদের,
থাকতো প্রচুর ডরে,
এই সুযোগে ওই পাকিরা
সবকিছু লুট করে।
ছাড় পেতো না বাচ্চা-শিশু
করতো বুকে গুলি,
(আজ কী করে রাক্ষস ওসব
পাকসেনাদের ভুলি!)
ঠিক যে সময় এই মাটিতে
পড়তো ওদের পারা,
বঙ্গবাসী বাঁচতে ছুটে
হয় বাড়িঘর-ছাড়া।
দেখতো সারাবিশ্ব তখন
কেউ ছিলো না পাশে,
বিপদকালে থাকতে পাশে
বন্ধু ছুটে আসে।
একাত্তরের বাংলা তখন
বাঁচার মতো নয়,
ঠিক তখনই ভারত দিলো
বাংলাকে আশ্রয়।
চলছেই ওসব কমছে না তো,
যায় কী এখন করা?
দেখছে সারাবিশ্ব তখন
রোজ কত প্রাণ ঝরা।
একটি মানুষ ছিলেনÑযিনি
দেশ নিয়েছেন বুকে,
অত্যাচারে মানুষ যখন
মরছে ধুঁকে ধুঁকে।
(তাঁর কথা এই গল্পটিতে
কম বলেছি- কেন?
দৃষ্টিকটু লোক এটাকে
তেল না বলে যেন।
আমরা চিনি আমরা জানি
মহান মানুষটাকে,
যাঁর চেতনায় আমরা পেলাম
স্বাধীন বাংলাটাকে)
মার্চ মাসের ওই সাত তারিখে
কাব্য বলেন তিনি,
তাঁর কবিতা থাকবে দেশে
অমর চিরদিনই।
যেই ভাষণে উঠলো ক্ষেপে
বঙ্গবাসী- আর,
ভয়ের দেশে বীরসেনা সে
করলেন আবিস্কার !
ক্ষেপলো ওরাও- পঁচিশ তারিখ
রাত্রি হলো কাল,
একটি গণহত্যার ওরা
চাললো নতুন চাল।
(ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াল
রাত্রি হলো ওটা,
এই মাটিতে লেপ্টে আছে
সবার রক্তফোঁটা।)
ছাব্বিশে মার্চ সকাল থেকে
যুদ্ধ হলো শুরু,
খুব মরেছে- মৃত্যু ভয়ে
কেউ কাঁপে না দুরু।
লক্ষ বোনের সম্ভ্রমও হায়
খুব নিয়েছে কেড়ে,
লজ্জাতে কেউ কেউ গিয়েছে
এই পৃথিবী ছেড়ে।
কেউ বা আবার- জীবন থেকে
সব গিয়েছে ভেবে,
আঁচল বেঁধে যুদ্ধে নামে;
যায়নি তাঁরাও দেবে।
চলছে লড়াই যাচ্ছে সাথে
খুব মানুষের প্রাণ,
যাচ্ছে পাওয়া বাংলাদেশে
একটি জয়ের ঘ্রাণ।
তারপরও তো যাচ্ছে থেকে
যুদ্ধকালীন শোক,
প্রাণ হারালেন বুদ্ধিজীবী
অসংখ্য লেখক।
(এটাও তো এক- ক্ষতি আছে
বাংলাদেশে যত,
শূন্যমেধায় চাচ্ছিলো দেশ
করবে ওরা নত।
তাই মেরেছে দেশ থেকে সব
বুদ্ধিজীবী- আর,
সর্বশেষে হার থেকে তো
পায়নি ওরা ছাড় !)
একটি মুজিব, সাত সেরা বীর,
যোদ্ধা হলো কত-
উক্ত সবাই করতো শোষণ-
মুক্ত দেশের ব্রত।
নয়টি মাসের ত্যাগ স্বীকারে
আজকে এদেশ স্বাধীন,
এই সুখে আজ আমরা সবাই
নাচবো তা ধিন্ তা ধিন্।