চট্টগ্রামে বাংলাদেশ-ভারত ৫১তম মৈত্রী দিবস উদযাপন

16

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস উদ্যাপন করেছে চট্টগ্রামস্থ ভারতের সহকারী হাইকমিশন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ১০ দিন আগে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে ভারত স্বীকৃতি দিয়েছিল। সেই হিসাবে গত মঙ্গলবার ছিল বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবসের ৫১তম বার্ষিকী।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর রেডিসন ব্লু হোটেলে ভারতীয় ফিউশন মিউজিক ব্যান্ড ‘অক্সিজেন’ এবং বাংলাদেশের কয়েকজন স্বনামধন্য শিল্পীর অংশগ্রহণে একটি প্রাণময় সংগীত সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিভিন্ন ক‚টনৈতিক মিশনের কনসাল জেনারেল এবং চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় প্রবাসীসহ মুক্তিযোদ্ধা, সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়ী নেতা, গণমাধ্যমকর্মী, শিক্ষাবিদ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। অংশগ্রহণকারীরা মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, যাদের গৌরবময় আত্মত্যাগ স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধান অতিথি রেজাউল করিম চৌধুরী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত যে সমর্থন দিয়ে ছিল তা গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রায় ৩০ লাখ শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। মেয়র ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্য এবং ভারতীয় জনগণের সর্বোচ্চ ত্যাগের কথাও গভীরভাবে স্মরণ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে ‘সোনার বাংলা’ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে তা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, তিনি তার সমগ্র জীবন বাংলাদেশ এবং এর জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাহসী সৈনিকদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের কথাও স্মরণ করেন। যারা তাদের বাংলাদেশি ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছিলেন।
রাজীব রঞ্জন উল্লেখ করেন যে, সা¤প্রতিক বছরগুলিতে ভারত ও বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ‘সোনালী আধ্যায়’ অতিক্রম করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এই অংশীদারিত্বকে একটি নতুন মাত্রা দিয়েছে।
ডা. রঞ্জন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বকেও ছাড়িয়ে গেছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কগুলি অনেক পরিপক্কতা এবং স্বাচ্ছন্দ্য অর্জন করেছে। আর সমস্ত সমস্যা একটি বন্ধুত্বপূর্ণ উপায়ে সমাধান করা হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যে বন্ধুত্ব, বোঝাপড়া ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার চেতনা জন্মেছিল তা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি দুই দেশের জনগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধনের অদম্য চেতনাকে লালন করে মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকার ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।