চকরিয়ায় পাহাড় কাটা বন্ধে অভিযান, স্কেভেটর জব্দ

55

চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে অবৈধ পাহাড় দখল বন্ধে অভিযান চালিয়েছে চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তানভীর হোসেন। এসময় খবর পেয়ে সংশ্লিষ্টরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে একটি স্কেভেটর জব্দ করা হয়।
কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার এর নির্দেশে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হোসেন গত বুধবার রাতে এ অভিযান চালায়। অভিযান চালিয়ে খুটাখালী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের অন্তত ২০ একরের বিশাল একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় অবৈধ দখলের হাত থেকে রক্ষা করা হয়।
সূত্র জানায়, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে ব্যক্তি মালিকানাধীন অন্তত ২০ একরের একটি বিশাল পাহাড় রয়েছে। এটি পর্যায়ক্রমে দখলে নিতে ইতোমধ্যে সকল পরিকল্পনা সম্পন্ন করে একটি প্রভাবশালী চক্র। তারই অংশ হিসেবে চক্রটি স্থানীয় প্রশাসনের অগোচরে গত কয়েকদিন ধরে পাহাড় কাটা শুরু করে। গত ২০ নভেম্বর বিকালে বিষয়টি নজরে আসে কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসারের। এসময় তিনি পাহাড়কাটাস্থলে অভিযান পরিচালনার জন্য চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মো. তানভীর হোসেনকে নির্দেশ দেন। নির্দেশনা পেয়ে ২০ নভেম্বর রাতেই স্থানীয় ভ‚মি কর্মকর্তাকে (তহশিলদার) সাথে নিয়ে পাহাড়কাটাস্থলে অভিযান পরিচালনা করেন এসিল্যান্ড। অভিযানের খবর পেয়ে ঐ চক্রের সদস্যরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে একটি স্কেভেটর গাড়ি জব্দ করেন তিনি। পরে এস্কেভেটরটি স্থানীয় চেয়ারম্যানের জিম্মায় দেওয়া হয়।
খুটাখালী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের স্থানীয় কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ব্যক্তি মালিকাধীন বিশাল আকৃতির পাহাড়টি কাটছিলেন চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের শাহ আলমের ছেলে সরোয়ার, মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে এরশাদুর রহমান, হাবিবুর রহমানের ছেলে মনসুর আলম, মাকসুদুল আলমের ছেলে হাসানুল ইসলাম আদর ও উখিয়া উপজেলার ইনানী এলাকার বদিউর রহমানের ছেলে নুরুল হক। তারা এস্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে ডাম্পার (পিকআপ) ভর্তি করে বিভিন্ন জায়গায় মাটি বিক্রি করে আসছিলো। গত ২০ নভেম্বর জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাদের সব পরিকল্পনা নষ্ট হয়ে যায়। তবে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সাময়িকভাবে পাহাড়কাটা বন্ধ হলেও আদৌ রাঘববোয়ালদের হাত থেকে পাহাড়টি রক্ষা পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মো. তানভীর হোসেন বলেন, খুটাখালী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে গত ২০ নভেম্বর রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালাই। এসময় অভিযানের খবর পেয়ে পাহাড় কাটায় জড়িতরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে একটি এস্কেভেটর জব্দ করে পরে তা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বিষয়টির ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে মহোদয়কে অভিহিত করা হয় বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুল আমিন বলেন, খুটাখালী ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামে পাহাড় কাটার খবর পেয়ে স্থানীয় তহশিলদারকে (ইউনিয়ন ভ‚মি কর্মকর্তা) সাথে নিয়ে দু’দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। এ সময় স্থানীয়দের সাথে কথা বলে পাহাড় কাটার সাথে জড়িত বেশ কয়েকজন নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। পাহাড় কাটার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে পরবর্তীতে পরিবেশ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।