ঘি’র নামে ‘বিষ খাওয়াচ্ছে’ বিএসপি ফুডস! র‌্যাবের অভিযানে বিপুল বিষাক্ত ফ্লেভার, পাম অয়েল ও ডালডা উদ্ধার, ম্যানেজার আটক

19

এক দশক আগে ২০১২ সালের ২৪ ডিসেম্বর কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকায় খাদ্যপণ্য তৈরির প্রতিষ্ঠান বিএসপি ফুড প্রোডাক্টস (প্রা.) লিমিটেডে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। খাদ্যপণ্যে সুতার রং মেশানো, বিএসটিআই’র মানচিহ্ন ব্যবহার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ২০২০ সালে এসে জরিমানা করা হয় ২১ লাখ টাকা। একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের মাধ্যমে জরিমানা করার পরও প্রতিষ্ঠানটি শুধরায়নি। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, নিম্নমানের ভেজাল পণ্য উৎপাদন, বিষাক্ত ফ্লেভার, পাম অয়েল ও ডালডা দিয়ে ঘি তৈরি অব্যাহত রেখেছে বিএসপি ফুডস। ঘি তৈরির প্রধান উপাদান দুধ হলেও তার ছিটেফোঁটাও নেই বিএসপি ফুডসের ঘিয়ে।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিএসপি ফুডস কারখানায় অভিযান চালায় র‌্যাব-৭। সেখান থেকে আবারও ৩ হাজার ৩৬০ কেজি ভেজাল ঘিয়ের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ নিম্নমানের বিষাক্ত ফ্লেভার, পাম ওয়েল ও ডালডা উদ্ধার করা হয়। কারখানাটির জেনারেল ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম নিজামকে আটক করে র‌্যাব। যদিও বরাবরের মতো এবারও কারখানাটির মালিক অজিত দাশ ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।
বিভিন্ন সময়ে বিএসপি ফুডসে প্রশাসনের তদারকি থাকলেও বন্ধ ছিল না প্রতিষ্ঠানটির ভেজাল ঘি ও খাদ্যপণ্য উৎপাদন। ক্ষতিকর বিভিন্ন ক্যামিকেলের ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষকে ঠকানোর কারণে বড় জরিমানাও করা হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খুবই নিম্নমানের পণ্য উৎপাদনের কারণে ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানকে ২১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই অপরাধে পরের বছর (২০২১ সালে) জরিমানা করা হয় ১ লক্ষ টাকা। একের পর এক ভেজাল ঘি ধরা পড়লেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় কারখানাটির মালিক অজিত দাশ। অভিযানের আগে তিনি কারখানা ত্যাগ করেন প্রতিবার।
র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার বলেন, চান্দগাঁওয়ের বিএসপি ফুডস প্রোডাক্টস প্রতিষ্ঠানের ভেতরে বিক্রির উদ্দেশ্য ভেজাল ও নিম্নমানের বিষাক্ত ফ্লেভার, পামওয়েল ও ডালডার সংমিশ্রণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দুধের কোনো উপাদান ছাড়াই ঘি তৈরি করছে খবর পাই। সে তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ঘি জব্দ করা হয়েছে। আটক আমিনুল ইসলাম নিজামের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চান্দগাঁও থানায় পাঠানো হয়েছে।