‘গৎবাঁধা’ মার্কিন প্রতিবেদনে মৌলিক তথ্যে ভুল: শাহরিয়ার

14

পূর্বদেশ ডেস্ক

বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়ে মার্কিন প্রতিবেদনকে ‘অতীতের ধারাবাহিকতায় গৎবাঁধা’ মূল্যায়ন হিসেবে বর্ণনা করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, এ প্রতিবেদনের বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ে ‘ভুল তথ্য’ আছে। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনের বিষয়ে গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি সরকারের এই প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন। খবর বিডিনিউজের
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবেদনটি কেবল প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রতিবেদনটার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ শুরু করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় বলতে পারি, এ প্রতিবেদন বাংলাদেশে সরকারবিরোধী যেসব প্রপাগান্ডা মেশিন আছে; সেগুলো থেকে প্রাথমিকভাবে তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে।’
মঙ্গলবার প্রকাশিত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই বার্ষিক প্রতিবেদনে ২০২১ সালে অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও নির্যাতনের’ মত অভিযোগ থাকলেও তারা ‘দায়মুক্তি পেয়ে আসছে’ বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ভাষ্য।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে, সেই নির্বাচন নিয়েও সমালোচনা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘দুঃখ এবং পরিতাপের বিষয় হল, অতীতের মত একটা ধারাবাহিকতা এ প্রতিবেদনে আছে। গৎবাঁধা বিষয় আছে। প্রতিবেদনে ফান্ডামেন্টাল অনেক কিছু ভুল আছে।’
নিরাপত্তা বাহিনীর ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতিতে’ সরকারের ‘দায়মুক্তি’ দেওয়ার যে অভিযোগ করা হয়েছে, তাতে ‘মিথ্যাচার রয়েছে’ বলে অভিযোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
‘প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমরা নাকি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দুয়েকজন সদস্যের ওপর ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা ঠিক নয়। গত তিন বছরে র‌্যাব ও পুলিশের ১৯০ জন সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এতগুলো লোককে চাকরিচ্যুত করার পরও সেখানে দুয়েকজন কীভাবে বলা হয়? বাংলাদেশের ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি ‘সম্মান জানিয়ে’ প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এলজিবিটিদের জন্য বাংলাদেশে আইন নেই এবং বাংলাদেশ তাদের প্রয়োজন মেটাতে পারছে না। এটা আমাদের ইসলাম ধর্মের পরিপন্থি। পৃথিবীর এমন একটা মুসলিম দেশ দেখান, যারা এলজিবিটিকে অনুমোদন দেয়। যত দেশ বা সংস্থা থেকে চাপ আসুক না কেন, এলজিবিটি প্রশ্নে কোনো ছাড় দেবে না বাংলাদেশ। এটা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বিরোধিতা করা হবে। ধর্মের সঙ্গে বিরোধিতা করা হবে।’
প্রতিবেদনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘রাজনৈতিক বন্দি’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা ‘সঠিক নয়’ বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার বিষয়টিও এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে রাজনৈতিক বন্দি বলা হয়েছে। তিনি তো রাজনৈতিক বন্দি নন।
আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যতবার এ নিয়ে কথা বলেছি, সেখানে আমরা সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। তাকে মানবিক কারণে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে বাসায় থাকতে দেওয়া হয়েছে। তার বিদেশে যাওয়ার প্রশ্নটাও অমূলক ছিল।’