খালেদা জিয়ার তিন মাস ধরে চিকিৎসা নেই

24

হাসপাতালে দ্বিতীয় দফা চিকিৎসা শেষে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার পর তিন মাসের বেশি সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কোনো চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছে বিএনপি।
গত রোববার খালেদার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড তাকে কারাগারে দেখে এসেছে জানিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসা না দেওয়ায় খালেদার রোগগুলো ‘মারাত্মক রূপ’ নিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, মেডিকেল বোর্ড সাড়ে তিনমাস পরে গত পরশু (রোববার) আদালতের নির্দেশে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছিল, পরীক্ষা করতে গিয়েছিল।
তারা পরীক্ষা করে দেখে বিস্মিত হয়েছেন যে, গত সাড়ে তিন মাসে তার কোনো রকম রক্ত পরীক্ষা করা হয় নাই, তার ব্লাড সুগার পরীক্ষা করা হয় নাই, কোনো এক্সরে করা হয়নি, তার ব্লাড প্রেসার মাপা হয় নাই, তাকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
দুর্নীতির দুই মামলায় এক বছরের কারাবাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে দুই বার চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়েছিল। প্রথমবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য গত এপ্রিলে। দ্বিতীয়বার নিয়ে ৬ অক্টোবর থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত তাকে রাখা হয়েছিল। খবর বিডিনিউজের
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সাড়ে তিন মাস আগে যে অসুখ নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সেই অসুখগুলো আরও বেড়ে গেছে। বাম কাঁধে ব্যথা বৃদ্ধি পেয়েছে, ডান কাঁধে নতুন করে ব্যথা হচ্ছে। বাম বাহু, বাম পায়ে এবং কবজিতে ব্যথা অনেক বেশি বেড়েছে। ফলে কারও সাহায্য ছাড়া তিনি এখন দাঁড়াতে ও চলতে পারছেন না। প্রচন্ড ব্যথা ও কাঁপুনির জন্য তিনি হাত দিয়ে কিছু ধরেও রাখতে পারছেন না।
তিনি যে রোগগুলোতে ভুগছেন তা অত্যন্ত মারাত্মক রোগ। তার বয়স ৭৩ এর পথে। এই বয়সে এই রোগগুলোর যদি নিয়মিত চিকিৎসা না হয়, প্রতিদিন যদি মনিটর না করা হয়, তাহলে তার জীবনের প্রতি মারাত্মক হুমকি এসে যেতে পারে। গত সাড়ে তিন মাসে দেশনেত্রীর হৃদরোগ, লিভার কিংবা কিডনির কোনো পরীক্ষা করা হয়নি। যা নিয়মিতভাবে করা অত্যন্ত জরুরি ছিল।
ফখরুল বলেন, কারাগারে যথা সময়ে দেশনেত্রীর চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করা এবং পরিত্যক্ত কারাগারে রেখে দেশনেত্রীর স্বাস্থ্যের অবণতি ঘটানোর মাধ্যমে ষড়যন্ত্রের আশংকার কথাটা আমরা বার বার বলে আসছি। সেই ষড়যন্ত্র, সেই চক্রান্তটি হচ্ছে তাকে চিকিৎসা না দিয়ে অকালে এভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া।
সুচিকিৎসা না দেওয়া এবং কয়েকদিন পর পরেই তাকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে হাজির করে মানসিকভাবে হেনস্তা করা- এই সরকারের ষড়যন্ত্রের অংশ বলে দেশবাসী মনে করে।
খালেদা জিয়ার কোনো ক্ষতি হলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।
দলের চেয়ারপারসনের সর্বোত্তম সুচিকিৎসার জন্য যদি ‘বাড়তি’ ব্যয়ের প্রয়োজন হলে তা দল বহন করতে রাজি বলেও জানান মহাসচিব।
তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যদের দীর্ঘ সময় পর পর সীমিত সময়ের জন্য দেখা করতে দেওয়া হয়। দলের পক্ষ থেকে গত চার মাস ধরে কাউকে দেখা করতে অনুমতি দেওয়া হয়নি এমনকি তার আইনজীবীরাও সাক্ষাৎ পায়নি।