কোর্ট হিলের অবৈধ স্থাপনা সরাতে ২৫ দপ্তরের চিঠি

15

নিজস্ব প্রতিবেদক
কোর্ট হিলের নিরাপত্তা ও সৌন্দর্য রক্ষার্থে অনুমোদনহীন স্থাপনাসমূহ অপসারণের জন্য সরকারি ২৫টি দপ্তর থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীর কোর্ট হিলে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি কর্তৃক ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমিতে দুটি ভবন নির্মাণের চেষ্টার পরিপ্রেক্ষতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারিকৃত পত্রানুযায়ী প্রধানমন্ত্রী উক্ত ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমিতে নতুন কোনো ভবন নির্মাণ না করা এবং ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি কর্তৃক অবৈধভাবে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো অপসারণের নির্দেশনা দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির নতুন দুটি ভবন নির্মাণ নিয়ে দ্ব›েদ্ব জড়ান জেলা প্রশাসন ও আইনজীবীরা।
চিঠি দেয়া সরকারি দফতরগুলো হলো, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, অ্যাটর্নি জেনারেল, বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, চট্টগ্রাম ওয়াসা, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্র পাথরঘাটা চট্টগ্রাম, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল কার্যালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধিশাখা-৯, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও পুলিশ অধিদফতর। এসব দপ্তরের পাঠানো চিঠিতে অবৈধ স্থাপনা সরাতে ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী হিল বা টিলা শ্রেণির জমির কোনো রূপ পরিবর্তন করা যাবে না। এটা আইনি বাধ্যবাধকতা। বাঁশখালী, মিরসরাই, লোহাগাড়াতে অনেক পাহাড় কাটা বন্ধ করেছি। চট্টগ্রামের অবৈধ ১৫৬টি ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে পাহাড় শ্রেণির জমিতে হওয়াতে। কোর্ট হিলে ওঠার পথে পুরাতন বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন লাগোয়া পথের পাশে আইনজীবী সমিতির ভবন। সেখানে পরপর এনেক্স-১, এনেক্স-২, শাপলা ও দোয়েল ভবন। পাঁচ ভবনের কোনোটিতে গাড়ি রাখার জায়গা নেই। তার উপর আবার আরও দুটি নতুন ভবন নির্মাণ, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ও ঝুঁকিপূর্ণ।
তিনি বলেন, যেহেতু ভবন দুটির জায়গাও পাহাড় শ্রেণির জমি, তাই চাইলেও আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কিছু করতে পারবে না। এখানে ভূমিকম্প, ভূমিধস বা অগ্নিকাÐের মত কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা আছে, যা ফায়ার সার্ভিস ও পরিবেশ অধিদপ্তরের রিপোর্টে উঠে এসেছে।
সূত্র জানায়, আইনজীবীদের পাঁচটি ভবনে মোট সাড়ে তিন হাজার আইনজীবীর চেম্বার রয়েছে। বর্তমানে সমিতির ভোটার ছয় হাজার। এমন অবস্থায় নতুন করে আরও দুটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সমিতি। সে ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ ও অনুমোদনহীন বলছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কোর্ট হিল নিয়ে তাদের দেয়া রিপোর্টে আইনজীবীদের অবৈধভাবে গড়ে উঠা পাঁচটি ভবনকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যারফলে কোর্ট হিলে যে কোনো সময় অগ্নিকাÐ, পাহাড় ধস ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ ব্যাপক প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে তাদের দেয়া রিপোর্টে উপস্থাপন করেছেন। তবে আইনজীবীরা জানিয়েছেন, অনুমোদন নিয়েই এসব ভবন করা হয়েছে।