কৃষিপণ্য যাচ্ছে পার্সেল ট্রেনে

27

কঠোর লকডাউনে সড়কপথে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল কমে যাওয়ায় ট্রেনে মালামাল পরিবহনের দিকেই ঝুঁকছে ব্যবসায়ীরা। রেলওয়ের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদেরও উৎসাহিত করা হচ্ছে। এবার লকডাউনকে ঘিরে সমন্বিত পরিকল্পনা করেছে রেলওয়ে। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় যে ক্ষতি হচ্ছে গত ১৪ এপ্রিল থেকে, পার্সেল ট্রেন চালুর পর থেকে তা কিছুটা কমানোর চেষ্টা করছে রেল।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম টু সরিষাবাড়ি রুটের চলাচলকারী ৫টি ল্যাগেজভ্যানে কমপক্ষে ২০ হাজার মেট্রিক টন মালামাল (ভারি মালামাল) বহনের সক্ষমতা আছে। চট্টগ্রাম থেকে পার্সেল ট্রেন ছেড়ে বিকাল ৩টায় সরিষাবাড়ি পৌঁছবে। ভোর সাড়ে ৫টায় সরিষাবাড়ি থেকে ছেড়ে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রামে পৌঁছবে। এর আগে করোনা বাড়ায় গত বছরের মে মাসেও পার্সেল ট্রেন চালু হয়। যার সুফল পায় রেল।
রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, করোনাকালে সব ধরনের পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি কৃষিজাত পণ্য ও পার্সেল মালামাল পরিবহনের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে বিশেষ পার্সেল ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে। রেলওয়ে অতীতে বিভিন্ন সময় ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন, ক্যাটল ট্রেনসহ পার্সেল ট্রেন পরিচালনা করেছে। রেলওয়ে বর্তমানে তেল, সারসহ অন্যান্য মালামাল পরিবহন করছে। কৃষিপণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে বিশেষ পার্সেল ট্রেনে শাকসবজি, দেশীয় ফলমূলসহ অন্যান্য কৃষি পণ্যাদি পরিবহন করা হবে। এ ক্ষেত্রে মূল ভাড়ার ওপর ২৫ শতাংশ রেয়াত ও অন্যান্য সব ধরনের চার্জ মওকুফ থাকছে।
পরিবহন বিভাগ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম টু জামালপুর রুটের ট্রেনটি ২২টি স্টেশনে বিরতি নিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে সীতাকুন্ড, চিনকি আস্তানা, ফেনী, নাঙ্গলকোট, লাকসাম, কুমিল্লা, আখাউড়া , ভৈরব বাজার কালিয়ারচর, বাজিতপুর, সরারচর, মানিকখালী, গচিহাটা, কিশোরগঞ্জ, নান্দাইল, আঠারবাড়, সোহগী, ইশ্বরগঞ্জ, গৌরীপুর ময়মনসিংহ জংশন, ময়মনসিংহ নুরুন্দি, নন্দিনা ও জামালপুর স্টেশন।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ‘পার্সেল ১ ও ২’ ছাড়াও ঢাকা- ভৈরববাজার- আখাউড়া-সিলেট রুটে চলাচল করবে পার্সেল ৩ ও ৪। ইঞ্জিনসহ মোট ৫টি গাড়ি থাকছে ‘পার্র্সেল ৩ ও ৪’ ট্রেনটিতে। এতে মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হবে ৪টি মালগাড়ি (বগি/ লাগেজভ্যান) ও একটি গার্ডব্রেক।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনা বিধিনিষেধে পার্সেল ট্রেন চালানো হচ্ছে। কৃষিপণ্য পরিবহনে এ ট্রেনে খরচ কম। আমরা ব্যবসায়ীদের এ ট্রেন ব্যবহারে উৎসাহিত করছি। সড়কপথের চেয়ে পার্সেল ট্রেন ব্যবহারে নানামুখি সুবিধা আছে।
এদিকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় রেলের ক্ষতি হচ্ছে দৈনিক ২৬ লক্ষ টাকা। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রেলওয়ের পক্ষ থেকে পার্সেল ট্রেন চালুসহ পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলে জনবল সংকট কাটাতে বন্ধ থাকা যাত্রীবাহী ট্রেনের লোকোমাস্টার (চালক) ও ইঞ্জিন কাজে লাগাচ্ছে যান্ত্রিক বিভাগ। প্রতিদিন ৭টিরও বেশি পণ্যবাহী ট্রেন চলছে বলে জানা যায়।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন পূর্বদেশকে বলেন, করোনাকালে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় আমরা পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলে গুরুত্ব দিয়েছি। এজন্য সকল যাত্রীবাহী ট্রেনের চালক ও ইঞ্জিনগুলো কাজে লাগাচ্ছি।