কিভাবে রুম্পা সিদ্ধেশ্বরীতে?

32

স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পা পরিবারের সঙ্গে থাকতেন মালিবাগের শান্তিবাগে। কিন্তু তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বাসা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোড থেকে। কে বা কারা কিভাবে তাকে সিদ্ধেশ্বরীতে নিয়ে গিয়েছিলেন; নাকি তিনি নিজেই গিয়েছিলেন- এসব প্রশ্ন সামনে রেখে রুম্পার মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলার বাদী ওই থানার এসআই আবুল খায়ের বলেন, ‘রুম্পার বাসা থেকে ঘটনাস্থল প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে। ঘটনাস্থলের পাশে তিনটি ভবন রয়েছে। যেকোনো একটি ভবন থেকে নিচে পড়ে তিনি মারা যেতে পারেন। ঘটনাটি সন্দেহজনক, তাই অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দারাও কাজ করছেন’।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রুম্পা কিভাবে মারা গেছেন তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় গিয়েছিলেন কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে তার মৃত্যুর কারণ এখনই বলা সম্ভব নয়। তদন্ত চলছে’।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার এস এম শামীম বলেন, ‘রুম্পা কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য বা কেউ তাকে ডেকে এনেছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা রুম্পার মোবাইল ফোনটি পেয়েছি। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হচ্ছে। কেন তিনি সেদিন ওই জায়গায় এসেছিলেন তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। যে তিনটি ভবনের পাশে তার মরদেহ পাওয়া গেছে, ওই ভবনগুলোর কারও সঙ্গে রুম্পার পরিচয় ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে’। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
ঘটনার পরদিন (৫ ডিসেম্বর) ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, প্রাথমিকভাবে উপর থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার নমুনা পাওয়া গেছে। তার ভিসেরা ও ব্লাড পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর আগে শারীরিক মেলামেশা বা ধর্ষণ হয়েছে কিনা, সেই নমুনাও পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। নেওয়া হয়েছে ডিএনএ নমুনাও। সব পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে’।
এদিকে, রুম্পার সহপাঠীরা এই মৃত্যুর প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে। ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ এনে এর সঙ্গে যে-ই জড়িত থাক, দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানানো হয়েছে মানববন্ধন থেকে। রুম্পাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তার বাবা পুলিশ কর্মকর্তা রোকন উদ্দিনেরও।
উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর রাত ১১ টার দিকে মালিবাগের শান্তিবাগের একটি গলি থেকে রুম্পার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ সদরের বিজয়নগরে দাফন করা হয়েছে।