কর্ণফুলী তীরের ২১৮১ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে আল্টিমেটাম

42

কর্ণফুলী তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে ১০টি সংগঠন ও সাম্পানের মাঝিরা। গতকাল শনিবার ১১ টায় কর্ণফুলী তীরের সদরঘাটে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
সমাবেশে বক্তারা আগামী সাতদিনের কর্ণফুলী তীরের ২১৮১ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হলে আদালত অবমাননার অভিযোগ এবং পাশাপাশি কর্ণফুলী নদীর সব সাম্পানঘাট অচল করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়।
চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের উদ্দ্যোগে আয়োজিত উক্ত মানববন্ধন ও বৈঠা বর্জন সমাবেশে অংশগ্রহণকারী ১০টি সংগঠন হল বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন, ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক কল্যাণ সমিতি, সদরঘাট সাম্পান মালিক সমিতি, চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক কল্যাণ সমিতি, ইছানগর বড় সাম্পান মালিক কল্যাণ সমিতি, কর্ণফুলী নদী ফিশিং জাহাজ যাত্রী পারাপার কল্যাণ সমিতি, সদরঘাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি ও সদরঘাট লেবার কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দ অংশ গ্রহণ করেন। সমাবেশে বক্তরা বলেন, দেশের ৯২ শতাংশ আমদানি রপ্তানি যে নদী দিয়ে সম্পন্ম হয় সেই নদী রক্ষায় এতো নাটকীয়তা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। ফেব্রæয়ারি মাসে মাত্র ৬ দিন উচ্ছেদ অভিযান শেষে কি কারনে জেলা প্রশাসন নিরব হয়ে গেল তা সকলে জানতে চায়।
মানববন্ধন পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল, কর্ণফুলী গবেষক ও বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরাম চট্টগ্রাম সভাপতি অধ্যাপক ড. ইদ্রিচ আলী, চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান, কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী, সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক কল্যাণ সমিতি উপদেষ্টা জিন্নাত আলী লেদু, আবুল কালাম, সহ সভাপতি জাগির আহম্মদ, সহ সম্পাদক আবদুল মালেক ও অর্থ সম্পাদক ফরিদ আহম্মদ, চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাফর আহমেদ, ইছানগর বড় সাম্পান মালিক কল্যাণ সমিতি সভাপতি সাইফুর রহমান, কর্ণফুলী নদী ফিশিং জাহাজ যাত্রী পারাপার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আলী নূর, সদরঘাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি সভাপতি মোহাম্মদ জুয়েল, সদরঘাট লেবার কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবদুল জব্বার প্রমুখ।
সভায় সিইউজে সভাপতি নাজিমুদ্দিন শ্যামল বলেন, উচ্ছেদ অভিযান সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কর্ণফুলী রক্ষার এই আন্দোলন চলবে। কর্ণফুলী রক্ষায় চট্টগ্রামের সকল মানুষ আজ এক হয়েছে আমরা আদালতের নির্দেশনার বাস্তবায়ন চাই।
অধ্যাপক ইদ্রিচ আলী বলেন, আদালতের নির্দেশনা নিয়ে লুকোচুরি চলবে না। আমরা প্রশাসনকে সতর্ক করছি। আগামীতে আপনাদের কাটগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আদালতের কাঠগড়ায় দোষী হওয়ার আগে উচ্ছেদ অভিযান সম্পন্ন করুন।
আলীউর রহমান বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন কর্ণফুলী তীরের জমি ইজারা ও ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করে। কিন্তু কর্ণফুলী রক্ষা ক্ষেত্রে বিমাতাসূলভ আচরণ মেনে নেয়া যায়না। কর্ণফুলী তীরের অবৈধ স্থাপনা আগামী ৭ দিনের মধ্যে শুরু না হলে আমরা রাস্তায় নামবো। একই সাথে উচ্চ আদালতে যাবো। গুটিকয়েক মানুষের স্বার্থ রক্ষায় জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দেয়ার কাজ কিছুতেই মেনে নিবে না জনগণ।
কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন সভাপতি এস এম পেয়ার আলী বলেন, উচ্ছেদ অভিযানে ঐতিহাসিক সদরঘাটের যাত্রী ছাউনি ভেঙে ফেলা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সিটি মেয়রকে আমরা উক্ত যাত্রী ছাউনি ও দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র পুনরায় নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। দুর্যোগ ও ঘূর্ণিঝড়ের সময় মাঝিদের ঘাটে থাকতে হয়। ঘাটে যাত্রী ছাউনি ও আশ্রয়কেন্দ্র না থাকলে মাঝি ও যাত্রী ঝড় তুফানের সময় যাবে কোথায়। বক্তারা ঐতিহাসিক সদরঘাট পাকা ও নান্দনিক ভাবে নির্মাণের দাবি জানান।