কর্ণফুলীতে বোট ডুবে নিখোঁজ ৪

44

কর্ণফুলী নদীতে যাত্রবাহী বোট ডুবে ৪ জন যাত্রী নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের সহকারী পরিচালক জসিম উদ্দিন পূর্বদেশকে জানান, কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ডাঙ্গারচর ঘাট থেকে নগরীর ১৩নং ঘাটে যাওয়ার সময় কর্ণফুলী নদীর সল্টগোলা খালের মুখে যাত্রবাহী বোট ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বোটটির ১২ জন যাত্রীর মধ্যে ৮ জনকে উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ রয়েছেন ৪ জন।
গতরাত ১১টায় সর্বশেষ খবরে জানা যায় নিখোঁজদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরি দল ও স্থানীয় লোকজন কাজ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, চলাচলের অনুপযোগী বোটটির ইঞ্জিন বিকল হয়। এ সময় জাহাজের সৃষ্ট ঢেউয়ে সেটি ডুবে যায়।
জুলধা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার মোহাম্মদ শরীফের বরাত দিয়ে পূর্বদেশের কর্ণফুলী প্রতিনিধি জানান, ডাঙ্গারচর বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকাস্থ ঘাট থেকে ১২ জন যাত্রী নিয়ে বোটটি নগরীতে যাচ্ছিল। কর্ণফুলী নদী পার হয়ে সল্টগোলা খালের মুখের কাছাকাছি গেলে বোটের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় জাহাজে সৃষ্ট ঢেউয়ের বিপরীতে পড়ে বোটটি ডুবে যায়। যাত্রীদের ভাসতে দেখে কাছাকাছি থাকা অন্য বোট দ্রæত সেখানে পৌঁছে ৮ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে। কিন্তু চার জন যাত্রী নিখোঁজ হন।
সাহাবুদ্দিন ওসমান নামের ইজারাদার থেকে সাব ইজারা নিয়ে মোহাম্মদ অলি আহমদ বোট পরিচালানা করছিলেন। কর্ণফুলী নদীতে চলাচলের অনুপযোগী বোট অপসারণ করে উপযোগী বোট আনার দাবি জানানো হলেও তাতে তিনি কর্ণপাত করেননি। ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ ফারুক জানান, আপত্তি সত্বেও নদীতে চলাচলের অনুপযোগী এসব বোট যাত্রী পারাপারে ব্যবহার করছে ইজারাদার। প্রায় সময় ইজারাদারের বোট নদীতে অকেজো হয়ে পড়ে। এ বিষয়ে যাত্রীরা আপত্তি করলেও তাতে কর্ণপাত করা হয় না। সর্বশেষ গতকাল বিকালে যাত্রী নিয়ে একটি বোট নগরীতে যাওয়ার সময় ঢেউয়ের মুখে পড়ে। এ সময় ঢেউ থেকে রক্ষার জন্য বোট চালক গতি বাড়িয়ে দিলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ঢেউয়ের আঘাতে বোটটি ডুবে যায়।
বিষয়টি নিয়ে জুলধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিক পূর্বদেশকে জানান, অকেজো বোট দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হয়। সিটি কর্পোরেশনকে বলার পরও ব্যবস্থা নেয় না। গতকাল যাত্রী নিয়ে নদীর মাঝপথে বোটের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। সেখানে ঢেউয়ের আঘাতে যাত্রীরা নদীতে পড়ে যান। তবে বোটে কতজন যাত্রী ছিলেন এবং কতজন নিখোঁজ রয়েছেন এর সঠিক তথ্য কারো জানা নেই। উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের বক্তব্যের উপর ধারণা করে ৪ যাত্রী নিখোঁজের কথা বলা হচ্ছে।
ঘটনাস্থল থেকে কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী জানান, সিটি কর্পোরেশনকে নজরদারী ও যাত্রীসেবা নিশ্চিতের জন্য বার বার বলার পরও কাজ হয় না। যাত্রী কর্ণফুলীর আর ইজারাদার বাইরের। সিটি কর্পোরেশন ঘাটের ইজারা দিয়ে দায়িত্ব সারেন। নজরদারী করেন না। এ কারণে প্রতি বছর কর্ণফুলীর লোকজনকে নদীতে ডুবে মরতে হচ্ছে।