কমল পাসের হার, বাড়ল জিপিএ-৫

50

নিজস্ব প্রতিবেদক

এ বছর এসএসসিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে গত বছরের তুলনায় বেড়েছে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৮ হাজার ৬৬৪ জন শিক্ষার্থী। গত বছর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৭৯১ জন। তবে জিপিএ-৫ বাড়লেও কমেছে পাসের হার। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবার এসএসসিতে পাসের হার ৮৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। গত বছর পাসের হার ছিল ৯১ দশমিক ১২ শতাংশ।
গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ এ তথ্য জানান।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এবছর বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে ২১৩টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৯২টি স্কুলের মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৫০ হাজার ১১২ জন। এর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪০ জন। পাস করেছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ১৩ জন। এদের মধ্যে ছাত্র ৬৭ হাজার ১৭১ জন এবং ছাত্রী ৭৭ হাজার ৩৭৯ জন। পাসের হার ৮৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ৩.৫৯ শতাংশ কম। ছাত্র পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ যা গত বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৮১ শতাংশ কম এবং ছাত্রী পাসের হার ৮৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ যা গত বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কম। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন সর্বমোট ১৮ হাজার ৬৬৪ জন যা গত বছরের তুলনায় ৫ হাজার ৮৭৩ বেশি। এর মধ্যে ছাত্র ৭ হাজার ৭৭৫ জন যা গত বছরের তুলনায় ২ হাজার ৩৯৩ বেশি এবং ছাত্রী ১০ হাজার ৮৮৯ জন যা গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ৪৮০ বেশি। এ বছর বিজ্ঞানে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৮১ শতাংশ, মানবিকে ৭৮ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৯১ দশমিক ৩০ শতাংশ। বিজ্ঞানে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫২৫ জন, মানবিকে ৪৭৬ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৩ হাজার ৬৬৩ জন। চট্টগ্রাম মহানগরে পাসের হার ৯৪ দশমিক ২১ শতাংশ। মহানগর ব্যতীত জেলায় পাসের হার ৮৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৮৯ দশমিক ১১ শতাংশ। কক্সবাজার জেলায় পাসের হার ৮৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ, রাঙামাটি জেলায় ৮১ দশমিক ৬০ শতাংশ, খাগড়াছড়ি জেলায় ৭৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং বান্দরবান জেলায় ৭৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। সকল সূচকেই এ বছর পরীক্ষার্থীরা বিগত বছরের তুলনায় খারাপ ফল করেছেন। জিপিএ-৫ বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও এগিয়ে আছেন ছাত্রীরা। গত বছরের তুলনায় তাদের জিপিএ-৫ বেড়েছে ৩ হাজার ৪৮০টি। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পিছিয়ে পড়া পার্বত্য এলাকায়ও এবার পাসের হার গত বছরের তুলনায় কমেছে।
শতভাগ পাস করেছেন ৭১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। শতভাগ পাসের তালিকায় প্রথম স্থানে আছে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দ্বিতীয় স্থানে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তৃতীয় স্থানে চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চতুর্থ স্থানে সেন্ট প্লাসিড স্কুল এন্ড কলেজ, পঞ্চম স্থানে মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ বৌদ্ধ উচ্চ বিদ্যালয়, ষষ্ঠ স্থানে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ, সপ্তম স্থানে ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল এন্ড কলেজ, অষ্টম স্থানে চকরিয়া গ্রামার স্কুল, নবম স্থানে হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এবং দশম স্থানে রয়েছে জামালখান কুসুম কুমারী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
এদিকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ এর দিক থেকে সেরা দশের তালিকায় ১ম স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল। এই প্রতিষ্ঠানের ৪৮৩ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তৃতীয় স্থানে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চতুর্থ স্থানে মুসলিম হাই স্কুল, পঞ্চম স্থানে চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নাসিরাবাদ বালক উচ্চ বিদ্যালয় ষষ্ঠ স্থানে, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সপ্তম স্থানে, বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় অষ্টম স্থানে, সিটি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নবম স্থানে এবং দশম স্থানে ইস্পাহনি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ পূর্বদেশকে বলেন, পাসের হার গতবারের চেয়ে কিছুটা কমেছে। তবে গত বছর শুধুমাত্র ৩ বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার সকল বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে। গত দুই বছরের তুলনায় এবার সার্বিকভাবে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল ভালো। পাসের হার কমলেও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যাটা আগের চেয়ে প্রায় দেড় গুণ বেশি বেড়েছে। তবে ইংরেজিতে ভালো রেজাল্ট হলে সার্বিকভাবে অন্য বোর্ডকে টপকাতে পারতো চট্টগ্রাম বোর্ড।